প্রকাশ্যে কচ্ছপ কেটে বিক্রি চলছে প্রকাশ্য দিবালোকে , ক্রমাগত লুপ্তপ্রায় হবার পথে এগোচ্ছ কচ্ছপ

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ, দক্ষিন দিনাজপুরঃ বেশ কয়েক বছর ধরে গঙ্গারামপুরে প্রশাসনের নাকের ডগায় বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেআইনি ভাবে বিক্রি করা হচ্ছে কচ্ছপের মাংস। একাধিক বার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্প্রচারিত হওয়া সত্ত্বেও কোনো ফল হয়নি, তবে কিছু সংখ্যক অসাধু কচ্ছপ ব্যবসায়ী ধরা পড়লেও কিছু অজানা কারনে তারা পুনরায় ছাড়াও পেয়ে গেছে। গঙ্গারামপুরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রকাশ্য দিবালোকে প্রশাসনের নাকের ডগায় এই অসাধু ব্যবসায়ীরা কচ্ছপ কেটে বিক্রি করছেন। কি করে তারা দিনের আলোয় এই কাজগুলো করতে সাহস পায়? নাকি প্রশাসন সব জেনেও নির্বিকার।স্থানীয় বাসিন্দারা আরও অভিযোগ রবিবার গঙ্গারামপুর শহরের সবচেয়ে বড়ো শিববাড়ি হাট বসে সেখানে প্রকাশ্যে নৃশংস ভাবে কচ্ছপ গুলোকে হত্যা করে বিক্রি করা হয় শুধু মাত্র বেশি টাকার লোভে ,প্রশাসন কেন কিছু বলেনা? এই বিষয় প্রশ্ন করা হলে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান তাদের অনুমান , পুলিশের সাথেগোপন আঁতাত রয়েছে এইসব অসাধু ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে এই বিলুপ্ত প্রায় প্রানীটি ধীরে ধীরে লুপ্ত হয়ে পড়ছে। আইনত কচ্ছপ ধরা বা মারা দন্ডনীয় অপরাধ শুধুমাত্র প্রশাসনিক উদাসিনতার কারনে প্রানীটি অঘোরে মারা পড়ছে। স্থানীয়দের দাবী অতি শিগ্রই এইসব অসাধু ব্যবসায়ীদের ধরে কঠিন শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি অবিলম্বে কচ্ছপের মাংস বিক্রি বন্ধ করা দরকার, নাহলে এই নিরীহ প্রানীটি এই পৃথিবীর বুক থেকে চিরতরে লুপ্ত হয়ে যাবে। বিলুপ্ত প্রায় প্রাণী হিসেবে বর্তমানে কচ্ছপের মাংস বিক্রি করা মূলত আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু তারপরেও প্রশাসনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে লুকিয়ে চুরিয়ে চলছে কচ্ছপের পাচার আর সেই কচ্ছপ কেটে চলছে দেদার মাংস বিক্রি। দক্ষিণ দিনাজপুরের বড় বড় হাটগুলি চোরাকারবারীদের মূল লক্ষ্য। বিহার থেকে বাংলাদেশে কচ্ছপ পাচার করার পথে পড়ছে দঃ দিনাজপুরের বালুরঘাট, কামারপাড়া, কুমারগঞ্জ, গঙ্গারামপুরের শিববাড়ি হাট ও সরাইহাট। আর সেখানেই প্রশাসনের নাকের ডগায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মোটা টাকা উপার্জন করার লোভে কচ্ছপ হত্যা করে মাংস বিক্রি করছে।

বনদপ্তর থেকে মাঝে মাঝে হানা দিলেও সেভাবে ধরা পড়ছে না মূল কারবারীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন দপ্তরের এক কর্মী জানান যে, প্রায় সময় বিভিন্ন হাটে হানা দিয়ে অবৈধ কচ্ছপ বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান চালালেও তা যে যথেষ্ট নয়, তা কচ্ছপের মাংস বিক্রির রমরমা কারবার দেখলেই বোঝা যাচ্ছে।এদিকে যত দিন যাচ্ছে কচ্ছপের মাংসের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছেদঃ দিনাজপুরে। এক কেজি কচ্ছপ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকায়, ফলে বেশি টাকা লাভের আশায় জেলায় গড়ে উঠছে বেশ বড় কারবার ।

বিহারের পূর্ণিয়া হয়ে ডালখোলা হিয়ে হয়ে রায়গঞ্জ হয়ে প্রতি সপ্তাহে বস্তাবন্দী করে কচ্ছপ আনা হয় দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের সরাইহাট ও গঙ্গারামপুরের শিববাড়ি হাটে । ফলে বস্তাবন্দী অবস্থাতেই মারা যাচ্ছে ছোট বড় বহু কচ্ছপ। শুধু মাংস নয়, জেলা জুড়ে হাটগুলিতে গোপনে কচ্ছপের মাংস বিক্রির পাশাপাশি কচ্ছপের চর্বিও পাচার করা হয় বাংলাদেশেও । ওষুধ তৈরির জন্য বাংলাদেশ হয়ে ওই চর্বি আবার বিদেশে যায় বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে। গত বছর হিলি এলাকা থেকে বিএসএফ কয়েক বস্তা ভর্তি কচ্ছপের চর্বি উদ্ধার করেছিল। যার প্রতি কেজির দাম ছিল ৩ হাজার টাকা। এই জেলার গঙ্গারামপুর লাগোয়া কুমারগঞ্জ এবং বুনিয়াদপুরের সরাইহাট এলাকায় গোপন ডেরায় চৌবাচ্চা তৈরি করে কচ্ছপগুলিকে রাখা হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন বাস পাল্টে বস্তাবন্দি করে কচ্ছপ বিভিন্ন প্রান্তে কারবারিদের হাতে পৌঁছে যায় বলে জানা গিয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে জানা গেছে, যা তথ্য আমরা পেয়েছি, তাতে করে এই অসাধু কচ্ছপ কারবারিদের হাতেনাতে ধরা সম্ভব হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *