মেয়ে মায়ের পচাগলা দেহ আঁকড়ে মানকুন্ডুর ফ্ল্যাটে, অবশেষে জানাজানি হল দুর্গন্ধ ছড়াতেই

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : মেয়ে ধূপ কিনতে দোকানে গিয়েছিলেন ফ্ল্যাটের ঘরে দুর্গন্ধ টিকতে না পেরে৷ পাড়ার লোকজন জানতে পারেন যে তাঁর মা মারা গিয়েছেন ধূপ কেন দরকার পড়ছে তা বলতে গিয়েই৷ মৃত মায়ের দেহ আঁকড়ে ফ্ল্যাটেই রয়েছেন মেয়ে৷ তবে বৃদ্ধা কবে মারা গিয়েছেন তা কেউই বুঝতে পারছেন না । প্রতিবেশীরা জানান, মেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন৷মা যে কবে মারা গিয়েছেন তাই তিনি হয়ত বুঝতেই পারেননি৷অভাবনীয় এই ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির মানকুন্ডুতে৷

জানা গেছে নব্বই বছরের নির্মলাবালা সাহা থাকতেন মানুকুন্ডুর রাধা অ্যাপার্টমেন্টে৷ সেখানে তিনি থাকতেন মেয়ে অসীমার সঙ্গে৷ অসীমা মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন৷ মঙ্গলবার বিকেলে অসীমা ধূপ কিনতে যান আবাসনের পাশেই একটি দোকানে৷ দোকানদারকে আরও জানান, ফ্ল্যাটের মধ্যে খুব দুর্গন্ধ৷ তাই দরকার পড়ছে ধূপের৷ অসীমা কথায় কথায় দোকানদার এবং সেখানে থাকা লোকজনকে জানান যে মারা গিয়েছেন তাঁর মা৷ এমনিতেই নির্মলাদেবীকে দেখা যায়নি গত ১৫ দিন ধরে৷ এমনকি লোকজনেরও বুঝতে কোনো রকম অসুবিধা হয় না অসীমা তাঁর মা মারা গিয়েছে জানাতেই ৷ তাঁরাই খবর দেন চন্দননগর থানায়৷ মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ এসে৷

বিছানায় পড়ে রয়েছে বৃদ্ধার দেহ

এই প্রসঙ্গে রাধা অ্যাপার্টমেন্টের সম্পাদক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানান, “অসীমা মানসিক বিকারগ্রস্ত। কিছুই বলতেন না আমাদেরকে।তাঁর মাকে শেষ দেখা গিয়েছিল দিন পনেরো আগে। আর দেখা যায়নি তারপর থেকে। আমরাও আর ঘরে ঢুকিনি সাহস করে। কারণ আমাদের উনি ঢুকতে দেন না । ঢুকলে উল্টে দোষারোপ করতেন আমাদেরকে। তবে কোনও গন্ধ পাইনি আমরাও। কারণ বন্ধ করে রাখা ছিল ফ্ল্যাটের জানালা-দরজা। পাশের কয়েকজন দোকানদারকে তিনি বলেছেন, ওঁর মা মারা গিয়েছেন। বিষয়টা তারপরই জানাজানি হয়। পরে আমরা বিষয়টি জানাই চন্দননগর থানায়।

তবে অসীমার থেকে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “মা উঠতে পারছিলেন না বেশ কিছুদিন ধরে। গতকাল মাকে দুধ চা খাইয়েছি। কিন্তু আজ সকালে যখন চা খাওয়াতে যাই তখন আর খাননি। কিছুই বুঝতে পারছিলাম না । কিছু বলিনি এমনকি ফ্ল্যাটের কাউকেও। তারা দুর্ব্যবহার করে আমার সঙ্গেও। মা সুগারের রোগী ছিলেন। কখন মারা গিয়েছেন ঠিক বুঝতে পারছি না । ধূপ আনতে গিয়েছিলাম ফ্ল্যাটে গন্ধ বেরোচ্ছিল বলেই।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *