জলমগ্ন ঘরে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ, মানুষের চরম দুর্ভোগ শহরের বিভিন্ন এলাকায় , এমনকি অমিল পানীয় জলও
বেস্ট কলকাতা নিউজ : সোমবার রাতভর বৃষ্টিতে বানভাসি অবস্থা হয় কলকাতার। বুধবার সকালে পরিস্থিতির আংশিক উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কাটেনি বহু নাগরিকের। ঘরে জল ঢুকে রয়েছে। নেই বিদ্যুৎও। ফলে পানীয় জলের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। এদিন সন্তোষপুর, পাটুলি, গড়িয়া, গরফা, মুকুন্দপুর, কালিকাপুর, অভিষিক্তা, বালিগঞ্জ, নন্দন চত্বর, আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকা জলমগ্ন ছিল। সব থেকে খারাপ পরিস্থিতি ই এম বাইপাস সংলগ্ন পাটুলি, সন্তোষপুর, মুকুন্দপুর, অভিষিক্তা, আনন্দপুরের বাসিন্দাদের। বিভিন্ন জায়গায় বাড়ির ভিতরে জল ঢুকেছে। জলে ভাসছে আসবাবপত্র। রান্নাবান্না শিকেয় উঠেছে। ফ্ল্যাটের একতলা জলে ডুবে রয়েছে। তার মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় আরও বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে বাসিন্দাদের। এদিন শহরের কিছু কিছু জায়গায় পানীয় জল নিয়ে বাসিন্দাদের অভিযোগ শোনা গিয়েছে। উল্টোডাঙায় বাগমারি বুস্টার পাম্পিং স্টেশনে যান্ত্রিক গোলযোগের জন্য পরিস্থিতি জটিল হয়। যদিও সেই অর্থে পানীয় জলের জন্য হাহাকার ছিল না বলেই দাবি পুরসভার। কিছু কিছু জায়গায় ট্যাংক পাঠিয়েও পানীয় জলের চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা চলেছে। যদিও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, যে জল এসেছে, তা পর্যাপ্ত নয়। সরু সুতোর মতো জল পড়েছে। এমনকি খাবারের জলও কিনে খেতে হয়েছে অনেককে।

এদিকে পুরসভার সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে কোনওভাবে বাগমারি পাম্পিং স্টেশনের ভালভ উড়ে যায়। যার ফলে জল সরবরাহ করা যাচ্ছিল না। তাই বুধবার ছোট পাম্প চালিয়ে এবং অন্যান্য উপায়ে দু’দফায় জল সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু তা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ছিল না। মঙ্গলবার থেকেই পাম্প ঠিক করার চেষ্টা চললেও তা করা যায়নি। অবশেষে বুধবার দুপুরের পর থেকে পাম্পিং স্টেশন পুরোপুরি বন্ধ করে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এই পাম্পিং স্টেশন থেকে জল সরবরাহ করা যাবে বলে জানিয়েছে পুরসভা।
অন্যদিকে পাটুলি, নয়াবাদ সহ কিছু অঞ্চলে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। বেকবাগান, পার্ক সার্কাসের বিভিন্ন অঞ্চলেও একই সমস্যা উঠে এসেছে। বেকবাগানের এক বাসিন্দার কথায়, ‘রাস্তার কলগুলিও ডুবে থাকায় পানের জল নেওয়া যায়নি। যেসব আবাসনে পুরসভার পানীয় জলের সংযোগ রয়েছে, সেখানেও ঠিকঠাক জল আসেনি।’ নয়াবাদের এক আবাসনের বাসিন্দা সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘পানীয় জল কিনতে হচ্ছে। বাড়ির সামনে রাস্তায় যে কল রয়েছে, সেটা তো জলের তলায়।’ বালিগঞ্জের অনিল মৈত্র রোডের বাসিন্দা অভিরূপ দাশগুপ্তের কথায়, ‘কাল থেকে কারেন্ট নেই। ফ্ল্যাটে থাকার মতো পরিস্থিতি নেই। জল ভেঙে কাজকর্মে যেতে হয়েছে।’ বালিগঞ্জের একাধিক অঞ্চল জলমগ্ন থাকার জেরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা ছিল। ফলে অনেকেই ফ্ল্যাট ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন বলে খবর। পাম্পিং স্টেশনও মেরামতির কাজ চলছে।