পুণেতে টেকনিশিয়ান আত্মঘাতী ব্ল্যাকমেলের জেরে, বাংলার কলসেন্টার থেকে গ্রেফতার ৬

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : পুণেতে এক বছর ৩৫-এর টেকনিশিয়ান আত্মহত্যা করেছেন। মৃতের বাড়ি থেকে পুলিশ দুটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে পুণের পিমপ্রি চিঞ্চওয়াড় থানার পুলিশ পশ্চিমবঙ্গের এক কলসেন্টারের ছয় কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। সুইসাইড নোট থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, সেক্সটর্শন কলের জেরে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। অভিযুক্তরা তাঁর থেকে ৫১ লক্ষ টাকা চেয়েছিল। পুলিশের অনুমান, কল সেন্টারটি পুনের আরও অনেক নাগরিককে একইভাবে টার্গেট হিসেবে বেছে নিয়েছে।

মৃত ব্যক্তি সোয়ারগেট এলাকার এক সংস্থায় টেকনিশিয়ানের কাজ করতেন। ১৫ মে দিঘি থানা এলাকার বাড়িতেই তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে। তাতে লেখা ছিল, তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে। পাশাপাশি, সুইসাইড নোটে ওই ব্যক্তি কিছু মোবাইল নম্বরেরও উল্লেখ করেছেন। ওই সব নম্বর থেকে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ব্ল্যাকমেল করা হয়েছে বলেও সুইসাইড নোটে লিখে গিয়েছেন ওই টেকনিশিয়ান। তাঁর অভিযোগ, ব্ল্যাকমেইলাররা তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ প্রোফাইল ছবি অশ্লীল ছবিতে বদলে দিয়েছিল। বিভিন্ন মোবাইল ফোন নম্বর থেকে অর্থের জন্য ক্রমাগত তাঁকে ফোন করছিল।

প্রথমে তারা ২,০০০ টাকা, তারপর ১০,০০০ টাকা দাবি করেছিল। পরে তারা ৫১ লক্ষ টাকা চেয়েছিল। ওই টাকা না দিলে, তাঁর ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দিয়েছিল। এই হুমকির পরে, অভিযু্ক্ত সাইবার অপরাধীদেরকে ১২ হাজার টাকা দিয়েছিল। সুইসাইড নোট থেকে এই সব জানতে পারার পরই পুণের দিঘি থানা এবং পিমপ্রি চিঞ্চওয়াড় পুলিশের অ্যান্টি এক্সটর্শন সেল যৌথভাবে তদন্তে নামে। এরপরই পশ্চিমবঙ্গের একটি কল সেন্টারের খোঁজ মেলে। সেখান থেকে ছয় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।

এই ব্যাপারে পুণে পুলিশ জানিয়েছে, ‘গত ৭ জুন কলকাতার দুর্গাবতী কলোনি এলাকায় একটি অভিযান চালানো হয়েছিল। যেখানে সন্দেহভাজনরা একটি কল সেন্টার চালাচ্ছিল। ওই কলসেন্টারের মাধ্যমেই অভিযুক্তরা অনলাইনে লোকজনকে প্রতারণা করছিল। আমরা ছয় সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছি। তারা এই র‌্যাকেট চালাচ্ছিল। তারা ভুয়ো ইমেল, ঠিকানা এবং ভয়েস বদলানোর ডিভাইস ব্যবহার করে শিকারকে ফাঁদে ফেলছিল। আর, তারপরে বিভিন্ন উপায়ে শিকারদের ওপর যৌন নির্যাতন চালাচ্ছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা হল সুরজকুমার সিং (২৭), নবীনকুমার রাম (২৩), সাগর রাম (২৩), মুরলি কেভাত (২৪), অমরকুমার রাম (১৯) ও ধীরেনকুমার পাণ্ডে (২৫)। ধৃতদের থেকে পুলিশ ১৫টি মোবাইল ফোন, আটটি ভয়েস অল্টারেশন ডিভাইস, ৪০টি সিম কার্ড, দুই ডজনের বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ডেবিট কার্ড-সহ নগদ টাকা এবং অন্যান্য জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। অভিযুক্তদের পুণের একটি আদালতে পেশ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *