বিষাক্ত কাফ সিরাপ কাণ্ডে অবশেষে চেন্নাই থেকে গ্রেফতার ওষুধ কোম্পানির মালিক

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : বিষাক্ত কাশির সিরাপ খেয়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় এবার গ্রেফতার করা হল ওষুধ কোম্পানির মালিক জি রঙ্গনাথনকে ৷ মধ্যপ্রদেশ পুলিশ চেন্নাইয়ের এই ওষুধ কোম্পানি শ্রীসান ফার্মার মালিক জি রঙ্গনাথনকে কোডাম্বক্কামে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে বলে খবর।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন জেলায় কাফ সিরাপ খেয়ে কমপক্ষে ২০ টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে ৷ এর পর তদন্তে নামে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ ৷ এরপরই গ্রেফতার করা হয়েছে ওই ওষুধ কোম্পানির মালিককে ৷ পুলিশ সূত্র জানা গিয়েছে, গোল্ডট্রিপের মালিক রঙ্গনাথন বেশ কয়েক দিন ধরে মধ্যপ্রদেশ পুলিশের রাডারে ছিলেন। তামিলনাড়ু পুলিশের সহায়তায় মধ্যপ্রদেশ পুলিশের একটি দল সকালে তাঁর কোডাম্বক্কাম বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে মধ্যপ্রদেশে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে, কোম্পানি কোনও রকম উৎপাদন নিয়ম লঙ্ঘন করেছে কি না, বা নিরাপত্তা শংসাপত্র জাল করার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে কি না।

জানা গিয়েছে, কাঞ্চিপুরম জেলার সুঙ্গুভার চাত্রমে অবস্থিত শ্রীসান ফার্মার তৈরি ‘কোল্ড্রিপ’ কাশির সিরাপ কেয়েছিল ওই শিশুরা ৷ প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সিরাপে ডাইথিলিন গ্লাইকোল (ডিইজি) ছিল, যা সাধারণত রং এবং কালি তৈরিতে ব্যবহৃত অত্যন্ত বিষাক্ত রাসায়নিক। ডিইজি’র ফলে কিডনি বিকল হতে পারে ৷ আর তাই বেশ কয়েকজন আক্রান্ত শিশুর ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে। তদন্তকারীদের মতে, মৃত শিশুরা মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের, যার মধ্যে উজ্জয়িনী, গুনা এবং শিবপুরী জেলা রয়েছে। এদের বেশিরভাগকেই সাধারণ সর্দি-কাশির জন্য সিরাপটি প্রেসক্রাইব করা হয়েছিল ৷ আর সেই সিরাপ খাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে জানা গিয়েছে।

এদিকে বিভিন্ন চিকিৎসা সত্ত্বেও, অনেকের কিডনিতে সমস্যা দেখা দিয়েছিল ৷ আর সে কারণেই তাদের মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা নিশ্চিত করেছেন, কমপক্ষে 40 জন শিশু বর্তমানে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে ৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। মৃত্যুর ঘটনার পরই অবশ্য মধ্যপ্রদেশ সরকার রাজ্যে কোল্ড্রিপের বেচা কেনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। পরবর্তীতে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সমস্ত রাজ্যকে সিরাপ বিক্রি স্থগিত করার এবং বর্তমানে মজুত থাকা সিরাপ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। এমনকি রাজ্যজুড়ে খুচরো ও পাইকারি বাজারে ২ ০০০ টিরও বেশি বোতল কোল্ড্রিপ এখনও পাওয়া যেতে পারে এমন রিপোর্টের পর তামিলনাড়ুর ওষুধ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ রাজ্যব্যাপী অভিযান শুরু করেছে। জেলা ওষুধ পরিদর্শকদের ওষুধ বাজেয়াপ্ত করে চেন্নাইয়ের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগারে নমুনা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *