১৪ বছরেই অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকা! আদালতে মামলা গড়াতেই ‘যাবজ্জীবন কারাবাসের’ সাজা শোনালেন বিচারক

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : ধর্ষণ মামলায় ৯ বছর পর অভিযুক্তকে আজীবন কারাবাসের সাজা শোনাল বর্ধমানের পকসো আদালত। পাশাপাশি, জরিমানা হিসাবে অভিযুক্তের ঘাড়ে চাপানো হল ১ লক্ষ টাকা। ঘটনা ২০১৬ সালের। হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানা এলাকার অন্তর্গত এক বছর চোদ্দোর নাবালিকা। অসুস্থতার লক্ষণগুলি স্বাভাবিক দেখায় না পরিবারের চোখে। তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে। প্রাথমিক ভাবে কিছু পরীক্ষানিরিক্ষা দেন চিকিৎসক। যার রিপোর্ট দেখে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় পরিবারের।

তাদের ১৪ বছরের মেয়ে নাকি অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু তা কীভাবে সম্ভব? এই বয়সে কোন ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছে নাবালিকা? তাকে ধরে জিজ্ঞাসা করতেই পরিবার জানতে পারে এক নারকীয় ঘটনার কথা। মাস দু-তিন আগেই তাকে বাগে পেয়ে ধর্ষণ করেছে তাদেরই প্রতিবেশী। দিয়েছে হুমকিও। আর সেই ভয়ে নিজের বাবা-মায়ের কাছে মুখ খুলতে পারেনি সে। মেয়ের মুখে পৈশাচিক অভিজ্ঞতার কথা শুনে তৎপর হয় পরিবার। সঙ্গে সঙ্গে থানায় গিয়ে পকসো মামলার আওতায় দায়ের হয় অভিযোগ। মামলা দায়ের করার পরদিনই অভিযুক্ত প্রতিবেশীকে গ্রেফতার করে ভাতার থানার পুলিশ। মামলা গড়ায় নিম্ন আদালতে। এরই মাঝে অবশ্য অন্তর্বর্তী জামিন পেয়েছিলেন সেই অভিযুক্ত।

উল্লেখ্য, ওই বছরের ৫ই সেপ্টেম্বর বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে গর্ভপাত করানো হয় নাবালিকার। যার নমুনা পাঠানো হয়েছে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য। এছাড়াও হয়েছে ডিএনএ টেস্ট। সেই ভিত্তিতে অক্টোবার মাস নাগাদ তদন্ত সম্পূর্ণ করে নিম্ন আদালতে প্রথম চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। ২০১৭ সালের ৯ই আগস্ট পেশ করা হয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট। নেওয়া হয় ১১ জনের সাক্ষ্য। ৯ বছরের টানাপোড়েনের পর অবশেষে এই মামলায় রায়দান করলেন বিচারক দেবশ্রী হালদার। দিনের পর দিন শুনানি। যুক্তি-তর্ক ও সাক্ষ্য প্রমাণ যাচাইয়ের পরে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আজীবন কারাবাসের সাজা ঘোষণা করেছেন তিনি। পাশাপাশি, অভিযুক্তকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা-সহ নাবালিকার পুনর্বাসনের জন্য ৩ লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *