আবাসিকদের উদ্যোগে আবাসনে তৈরি হয়েছে ছোটখাটো অরণ্য ! গরমকে হারাতে নতুন পথের সন্ধান ফরিদাবাদের এক আবাসনের
বেস্ট কলকাতা নিউজ : বিশ্ব কবি লিখেছিলেন ‘দাও ফিরে সে অরণ্য লও এ নগর…’ ৷ আধুনিক পৃথিবীতে এই ভাবনাকে বাস্তবায়িত করে দেখালেন হরিয়ানার ফরিদাবাদের ‘সামার পাম’ সোসাইটির বাসিন্দারা ৷ তীব্র গরমের হাত থেকে রক্ষা পেতে আবাসনেই বানিয়ে ফেললেন ছোটখাটো একটি বন ৷ জাপানের মিয়াওয়াকি পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে সাড়ে চার হাজার বর্গফুট এলাকায় প্রায় ১২০০ চারা গাছ বসিয়েছেন বাসিন্দারা ৷ চার বছর গোটা এলাকা অরণ্যের চেহারা নিয়েছে ৷ গাছ লাগালেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না ৷ তার রক্ষণাবেক্ষণ খুবই দরকারি বিষয় ৷ সেই বিষয় নিয়েও অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র পথেই হেঁটেছেন বাসিন্দারা ৷ বাড়িতে প্রতিদিনের আবর্জনাকে প্রক্রিয়াকরণ করে সেটিকেই সার হিসেবে ব্যবহার করা হয় ৷ তাতে আবাসন পরিস্কার থাকে এবং গাছেদের রক্ষণাবেক্ষণও নিজের নিয়মেই চলতে থাকে ৷
আবাসনের বাসিন্দা ববিতা সিং জানান , “আমাদের যাত্রা শুরু চার বছর আগে ৷ বাসিন্দারা সকলে মিলে আলোচনা করে ঠিক করি এখানেই একটি ছোট অরণ্য তৈরি করব ৷ তার জন্য গবেষণা শুরু করি ৷ জানতে পারি জাপানের মিয়াওয়াকি পদ্ধতির সাহায্য়ে খুব অল্প জায়গার মধ্যে অনেক গাছ লাগানো যায় ৷ তাছাড়া এই পদ্ধতির ব্যবহার করলে গাছ সহজে মরে যায় না ৷ আমাদের এখানে কোনও গাছ শুকিয়েও যায়নি ৷ অরণ্য গড়ে তোলার কাজে আমরা একশো শতাংশ সফল ৷ ফরিদাবাদের অন্য কোনও আবাসনে এমন পরিবেশ নেই ৷ “

আরেক বাসিন্দা প্রভদীপ আনন্দ বলেন, “আমি গত ৮ বছর ধরে প্রতি বছর একশোটি করে গাছ লাগাই ৷ একসময় আবাসনে আর জায়গা ছিল না ৷ এরপর সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম, বিক্ষিপ্তভাবে গাছ না লাগিয়ে পরিকল্পনা করে ছোটখাট বোন তৈরি করতে পারি ৷” তিনি আবাসনে মোট ২৮ রকমের গাছ আছে ৷ গত চার বছরে প্রতিটি গাছের উচ্চতা গড়ে ২ .৫ থেকে ৩ মিটার পর্যন্ত বেড়েছে ৷
মিয়াওয়াকি পদ্ধতি কী ? জাপানের বিজ্ঞানী আকিরা মিয়াওয়াকি এই পদ্ধতির জনক ৷ অল্প জায়গায় এক এবং বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কীভাবে লাগানো যায় তার খোঁজ দিয়েছেন আকিরা ৷ তিনি মনে করেন, কোনও একটি নির্দিষ্ট এলাকায় যে ধরনের গাছ বেশি পরিমাণে দেখা যায় সেখানে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো ৷ আর তার সাহায্যে বছরে গাছের উচ্চতা 2.5 স্কোয়ার মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে ৷ এই পদ্ধতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল মালচিং ৷ মাঠিতে খড় থেকে শুরু করে কাঠের আস্তরণ দেওয়া হয়ে থাকে ৷ এর ফলে মাটির আদ্রর্তা নষ্ট হয় না যা গাছের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে ৷ ২ থেকে ৩ বছর ধরে রক্ষণাবেক্ষণ করলে তবে ভালো ফল পাওয়া যায় ৷ ফরিদাবাদের আবাসনের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে ৷