একরত্তির মুখগহ্বর ঝলসে গেলো গরম জলে, তিন তিনটে হাসপাতাল ঘুরতে হল মায়ের কোলে চেপেই

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফের প্রশ্নের মুখে স্বাস্থ্য ভবনের ‘রেফার-প্রচার’। ডায়মন্ড হারবার, কলকাতা, রায়গঞ্জ সহ বিভিন্ন জায়গায় যখন রেফার নিয়ন্ত্রণ করতে পাইলট প্রজেক্ট শুরু হয়েছে, তার মধ্যেই উঠছে একের পর এক অভিযোগ। গড়িয়ার প্রৌঢ়ের পর এবার হাবড়ার পাঁচ বছরের শিশুকন্যা। গলা জ্বলছে, ঠোঁট পুড়ে গিয়েছে, এমন অবস্থায় ঘুরতে হল তিন তিনটি হাসপাতালে।রেফারের জাঁতাকলে ১৮ ঘণ্টা ধরে তিন হাসপাতাল ঘুরে বেড জুটল অটিস্টিক আক্রান্ত শিশুকন্যার। এসএসকেএম-এর মতো সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গিয়েও ঘুরতে হল এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে। বেড পেতে সময় লাগল অনেক। যন্ত্রণায় তখন কাতরাচ্ছে ওই শিশু।

এদিকে ফুটন্ত গরম জল খেয়ে ফেলে পাঁচ বছরের শিশুকন্যা। গরম জলে মুখের ভিতর ঝলসে যায় ছোট্ট অন্বেষার। একরত্তি শিশুকন্যার গাল জ্বলতে থাকে, ঠোঁট ফুলে ঝুলে যায়। এই অবস্থায় শিশুকন্যাকে নিয়ে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে প্রথমে অন্বেষাকে ভর্তি করেন তাঁর বাবা হেমন্ত মণ্ডল ও মা গৌরী মণ্ডল। বিকেল ৪টে নাগাদ হাসপাতালের তরফে মা-বাবাকে জানানো হয়, মুখগহ্বর পুড়ে যাওয়া শিশুর চিকিৎসা পরিকাঠামো হাবড়া হাসপাতালে অমিল। তাই কলকাতায় নিয়ে যেতে হবে। প্রশ্ন হল, আট ঘণ্টা পর তা বুঝতে পারলেন হাবড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ!

পরিকাঠামো নেই শুনে যন্ত্রণায় কাতর মেয়েকে নিয়ে আরজি কর হাসপাতালের এমার্জেন্সি বিভাগে নিয়ে যান বাবা-মা। বিকেল‌ তখন ৫টা ৪৫ মিনিট। সেখানে ঘণ্টাখানেক পর্যবেক্ষণে রাখার পর জানিয়ে দেওয়া হয়, সেখানে পুড়ে যাওয়া শিশুর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। এ কথা জানিয়ে, এন‌আর‌এসে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় বাবা-মাকে। এমার্জেন্সির টিকিটও বাবা-মায়ের কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হয়‌ বলে অভিযোগ।

অসহায় বাবা-মা এরপর শিশুকন্যাকে নিয়ে রাত ন’টা নাগাদ পৌঁছন এস‌এসকেএম-এ। সেখানে এমার্জেন্সি, শিশু বিভাগ থেকে ট্রমা কেয়ারে চরকি পাক কেটে রাত ১টা নাগাদ ইএনটি বিভাগে বেড পায় অন্বেষা। সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্বেষার স্কুলের শিক্ষিকা অমৃতা মুখোপাধ্যায় এই পোস্ট করেন। তা দেখে নাগরিক সমাজ সক্রিয় হয়ে যোগাযোগ করেন জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে। জুনিয়র চিকিৎসকদের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত বেড মেলে। তবে এই ঘটনা আর‌ও একবার স্বাস্থ্য ভবনকে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে দিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *