এক চরম অবাক কান্ড এনজিপিতে, বন্দে ভারত ধরতে এসে দেখা গেল দাড়িয়ে আছে শতাব্দি এক্সপ্রেস, চরম ক্ষুদ্ধ হল রেল যাত্রীরা

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

নিজস্ব সংবাদদাতা : নির্ধারিত সময়ে স্টেশনে পৌঁছেও বন্দে ভারতে চেপে গন্তব্যে যাওয়া হলো না যাত্রীদের! এদিন সকালে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছে যাত্রীরা দেখেন, সেই সময়ে স্টেশনের দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মে বন্দে ভারতের বদলে দাঁড়িয়ে রয়েছে অন্য একটি ট্রেন। প্রথমে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান যাত্রীরা। পরে খোঁজ নিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্দে ভারতের বদলে শতাব্দী এক্সপ্রেসের কোচ দেওয়া হয়েছে। ফলে বন্দে ভারতের টিকিট কেটেও এদিন শতাব্দীর কোচে যাত্রা করতে হয়ে যাত্রীদের।

এ দিন অসমের কোকরাঝাড় যাওয়ার জন্য সকাল ছ’টায় স্টেশনে পৌঁছন শিলিগুড়ির তিতিমান সাহা। তাঁর অভিযোগ, ‘এক মাস আগে টিকিট কেটেছি। এত ভাড়া গোনার পরেও স্টেশনে এসে দেখি অন্য একটি কোচের ট্রেন দাঁড় করানো।’ আবার আর এক যাত্রী নিলমকুমার মহন্তর অভিজ্ঞতা, ‘প্রথমে বুঝতেই পারছিলাম না আমাদের ট্রেনটা কোথায়। দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরে বুঝতে পারি এটাতেই আমাদের যাত্রা করতে হবে!’

বাসুদেব সাহা নামে এক যাত্রী প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েই রেলের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। তাঁর অভিযোগ, ‘ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকার পরে কোন সিটে গিয়ে বসব বুঝতে পারছিলাম না। জিজ্ঞাসা করা হলে টিটি যে কোনও একটা সিটে গিয়ে বসে যেতে বলেন। এ ভাবে যে কোনও জায়গায় গিয়ে বসা যায় বলুন?’ তাঁর মতো এই একই প্রশ্ন তোলেন অনেক যাত্রী। এ দিকে টিটি যেখানে খুশি বসতে বলার পরেই সিট বাছতে গিয়ে হুড়োহুড়ি লেগে যায়। নির্দিষ্ট সিটের দাম দিয়েও পছন্দমতো বসতে না–পারায় অনেকেই ক্ষোভ উগড়ে দেন।

আত্মীয়দের স্টেশনে পৌঁছে দিতে এসেছিলেন শিলিগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ার মুনমুন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘যদি কোনও কারণে সমস্যা হয়ে থাকে তা হলে রেল কর্তৃপক্ষের উচিৎ ছিল সঠিক ভাবে সিট বণ্টন করা।’পাশাপাশি বিলাসবহুল ট্রেনের ভাড়া দিয়ে কেন তুলনামূলক কম খরচের ট্রেনের কোচে যাত্রা করতে হবে, সে প্রশ্ন তোলেন অনেকে। রেলের বিরুদ্ধে সকলেই গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন রেল যাত্রীরা।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জলকিশোর শর্মার বক্তব্য, ‘ এনজেপিতে ওই ট্রেনটির রুটিন চেকআপের সময়ে কিছু ত্রুটি ধরা পড়ে। জেনারেটর এবং এসি কম্পার্টমেন্টে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয়। সেই কারনে এই সমস্যা তৈরি হয়। তবে যাত্রীরা প্রথম দিকে বুঝতেই পারেননি এটা কোন ট্রেন, এক যাত্রী অমিতাভ চৌধুরী জানান আমি গিয়ে দেখি শতাব্দি দাঁড়িয়ে আছে, আমি প্রথমে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিলাম, স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে যাচ্ছি এক ট্রেনে, গিয়ে দেখে অন্য ট্রেন পড়ে আছে। আমি তো বুঝতেই পারছি না। এত গুরুত্বপূর্ণ জিনিসে এই ধরনের প্রহসন কিভাবে হলো ।

অন্যদিকে আরেক যাত্রী রক্তিম রায় জানান এভাবে প্রহসন হলে আমাদের তো বিশ্বাসই উঠে যাবে। আজ বৃহস্পতিবার একই সমস্যা থাকবে বলে জানিয়েছে এনজিপি রেলওয়ে এক বিশেষ অফিসার। তবে সবকিছু স্বাভাবিক হবে বলে দাবি তার। কিন্তু তার এই যুক্তি মানতে নারাজ যাত্রীরা তারা জানিয়েছেন এত টাকা দিয়ে টিকিট কেটে, এইভাবে হয়রানি করার কোন মানে হয় না। এইভাবে চলতে গেলে তো মানুষের বিশ্বাসই চলে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *