এক ফ্রেমে রাহুল ও পাক সেনাপ্রধান ! ‘লজ্জাজনক’ পোস্টের বিরুদ্ধে থানায় থানাযএফআইআর দায়ের করা হল কংগ্রেসের তরফ থেকে

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : এক ফ্রেমে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি ও পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের মুখ ৷ এমনই এডিটেড একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন বিজেপির আইটি প্রধান অমিত মালব্য ৷ এই নিয়ে হইচই পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে । কংগ্রেসের অভিযোগ, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে রাহুল গান্ধি বিভিন্ন প্রশ্ন তোলায় এই ভাবে তাঁর ও তাঁর দলের সম্মানহানির চেষ্টা করা হয়েছে ৷ এই অভিযোগে রাজ্যজুড়ে থানায় থানায় এফআইআর কর্মসূচি নিয়েছে কংগ্রেস । গতকালও রাজ্যের বিভিন্ন থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ । বৃহস্পতিবারও বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে প্রদেশ কংগ্রেস ৷

উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় এফআইআর করেন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা । পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সম্পাদক সুমন রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে মিছিল করে থানায় গিয়ে এই অভিযোগ দায়ের করা হয় । সুমনের অভিযোগ, বিষয়টা নতুন নয় । রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো যাত্রার সময়েও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর কুৎসিত মন্তব্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় । কিন্তু, সে সময়ও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ।

সুমনের কথায়, “আমরা যদি তৃণমূল নেতা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে মামলা বা অভিযোগ দায়ের করতাম, তবুও ভাবতাম তৃণমূল ক্ষমতায় আছে বলে পুলিশ পদক্ষেপ করছে না । মনিবের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিতে ভয় পাচ্ছে । কিন্তু, বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে পুলিশ কেন ব্যবস্থা নেয় না বুঝি না । মনিবের বন্ধু বলে ? তৃণমুল-বিজেপির বোঝাপড়ায় কি পুলিশও সামিল ?”

এবিষয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার আরো বলেন, “অমিত মালব্যর করা লজ্জাজনক, বিভাজনমূলক ও ভিত্তিহীন আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি । যখন দেশের প্রয়োজন ঐক্য, পরিণতিবোধ এবং যুক্তিসঙ্গত আলোচনার, তখন অমিত মালব্যর বিষাক্ত ভাষণ আমাদের গণতন্ত্রকে ক্রমশ দুর্বল করে তুলছে, ভারতের জনগণের বুদ্ধিমত্তাকে অপমান করছে। অপারেশন সিন্দুর চলাকালে রাহুল গান্ধি সম্পূর্ণভাবে ভারত সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন । তিনি আমাদের সশস্ত্র বাহিনী ও দেশের নেতৃত্বকে সীমান্ত পারের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন । সেই অবস্থানকে বিকৃত করে ক্ষুদ্র রাজনৈতিক বিদ্রূপে পরিণত করা শুধু লজ্জাজনক নয়, এটি জাতির স্বার্থবিরোধী এবং জাতীয় স্বার্থ বিরোধী।”

জাতীয় কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতির পরিবারের মর্যাদার কথা টেনে এনে শুভঙ্কর সরকার আরও বলেন, “অমিত মালব্যর নৈতিক অধিকার নেই রাহুল গান্ধির দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলার । রাহুল গান্ধি এমন এক পরিবারের সন্তান, যাঁরা ভারতের জন্য রক্ত উৎসর্গ করেছেন । তাঁর ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধি এবং পিতা রাজীব গান্ধি দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন । এই উত্তরাধিকার সাহস, দেশপ্রেম এবং জাতীয়তাবাদের । যা কোনও বিজেপি নেতা, বিশেষ করে যিনি সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা ছড়িয়ে নিরাপদ দূরত্বে থাকেন, তা বোঝার যোগ্যতাও রাখেন না । অমিত মালব্য সেই দলের সদস্য, যাঁরা সাভারকরের প্রশংসা করেন । যিনি ব্রিটিশ শাসকদের কাছে ক্ষমাভিক্ষা চেয়ে স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন । বিজেপি সেইসব চরিত্রের বন্দনা করে, যাঁরা ক্ষমা প্রার্থনার চিঠি লিখেছেন । অথচ যাঁরা দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছেন, তাঁদের বংশধরদের বিদ্রূপ করে । বিজেপির কাছে জাতীয়তাবাদের কোনও নৈতিক দাবি নেই । বিজেপির  ইতিহাস কাপুরুষতা ও রাজনৈতিক সুবিধাবাদিতার উপর দাঁড়িয়ে আছে ।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *