এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বীরভূম জেলার রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের ৩২ নম্বর বুথের BLO সুমিতা রায় দত্ত

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বীরভূম : এক অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন বীরভূম জেলার রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত কুসুম্বা গ্রামের ২৯১বিধানসভার ৩২ নম্বর বুথের BLO কুসুম্বা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সুমিতা রায় দত্ত। যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বহু BLO-কে কাজের অতিরিক্ত চাপ, আতঙ্ক, অসুস্থতা এবং বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে—সেখানে উল্টো ছবি দেখা গেল কুসুম্বা গ্রামে। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই নিজের দায়িত্বের কাজ সম্পূর্ণ করে ফেললেন তিনি। কুসুম্বা গ্রামটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মামাতো ভাইয়ের বাড়ির গ্রাম হিসেবেও পরিচিত। এই গ্রামেই নিঃশব্দে, শান্তভাবে দায়িত্ব পালন করে একটি অনন্য বার্তা দিলেন শিক্ষিকা সুমিতা দেবী।

তিনি জানান বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখছি বহু BLO ভয়ে কাজ করতে পারছেন না, কেউ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, কেউ আবার হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। কিন্তু ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। ঠান্ডা মাথায় কাজ করলে আমিও যেমন পেরেছি, অন্যরাও পারবেন। শিক্ষিকা সুমিতা রায় দত্ত আরও বলেন তিনি কখনওই স্কুলের পড়াশোনা বন্ধ রেখে BLO-র কাজ করেননি। কারণ তার মতে যদি শিশুদের স্কুল বন্ধ রেখে কাজ করি, তাহলে তাদের মন পড়াশোনা থেকে সরে যাবে। তাই প্রতিদিন ঠিক সময়ে স্কুল করেই আমি অতিরিক্ত সময় বের করে BLO-র কাজ করেছি। অনেকদিন রাত দশটা পর্যন্ত কাজ করেছি। কিন্তু সময়ের আগেই কাজ শেষ করতে পারব, গ্রামের অধিকাংশ মানুষই কৃষিজীবী। সকালবেলা মাঠে কাজ করতে গিয়ে তারা সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন, এদিকে এই বিষয়টি মাথায় রেখে সুমিতা দেবী প্রতিদিন তাদের জন্য আলাদা সময় ঠিক করেছিলেন। তিনি সেই নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিতরণ ও সংগ্রহ করেন।

ফর্ম জমা দিতে গিয়ে তিনি বিড়িও অফিসে জানান,একসাথে সকলের ফর্ম নেওয়া হবে, আপনাকে ফোন করে জানানো হবে। পরবর্তীতে তিনি নিজেই মোবাইলের মাধ্যমে সব ফর্ম ডিজিটালি সাবমিট করেন এবং সম্পূর্ণ দায়িত্ব সফলভাবে শেষ করেন। ২৯১ বিধানসভার ৩২ নম্বর বুথে মোট ভোটার সংখ্যা ৭৪৯। এত সংখ্যক ফর্ম সময়ের আগেই সম্পূর্ণ করা গ্রামের মানুষের কাছে এক দৃষ্টান্ত। কুসুম্বা গ্রামে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু দায়িত্ববোধ, সংযম ও নিষ্ঠাই দেখালেন যে, ভয় নয় কাজটাই শেষ কথা। আর সেই উদাহরণ স্থাপন করলেন শিক্ষিকা সুমিতা রায় দত্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *