এবার থেকে ‘অপরাধী’ নেতারা কি নির্বাচনে লড়ার অধিকার হারাবেন আজীবন ? আজ এমনি এক যুগান্তকারী রায় দিতে পারে সুপ্রিম কোর্ট
বেস্ট কলকাতা নিউজ : আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই নেতা-মন্ত্রীরা। তাঁরা কোনও গুরুতর অপরাধ করলে সাজা দেওয়া হয় আইনের নিয়ম মেনেই। কিন্তু সাজা খাটার পরও রাজনৈতিক প্রভাব বা প্রতিপত্তি কমে না তাঁদের। ফৌজদারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাংসদ-বিধায়কদের আজীবন নির্বাচনে লড়ার উপর নিষেধাজ্ঞার দাবিতেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। আজ এই গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় দিতে পারে শীর্ষ আদালত।আজ, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি রয়েছে ফৌজদারি মামলায় দোষী রাজনীতিবিদদের নির্বাচনে লড়ার অধিকার বাতিল সংক্রান্ত মামলার। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ এই মামলায় আজ রায়দান করতে পারে।
জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে ১৯৫১-এর ৮(৩) ধারা অনুযায়ী, ফৌজদারি অপরাধে কোনও বিধায়ক বা সাংসদ যদি দুই বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়, তবে ওই রাজনীতিবিদ জনপ্রতিনিধিত্ব খোয়াবেন। সাজা ঘোষণার দিন থেকেই জনপ্রতিনিধি হওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। সাজার মেয়াদ পূরণের পরও, পরবর্তী ছয় বছর পর্যন্ত কোনও নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না ওই রাজনীতিবিদ।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতিই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মোদী পদবি নিয়ে মানহানি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় এবং দুই বছরের সাজা পাওয়ায়, পরেরদিনই তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল। পরে অবশ্য শীর্ষ আদালত সাজায় স্থগিতাদেশ দেওয়ায় সাংসদ পদ ফিরে পান।
এই জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ধারাকেই চ্যালেঞ্জ করে, ফৌজদারি মামলায় দুই বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য সাজাপ্রাপ্ত সাংসদ-বিধায়কদের আজীবন নির্বাচনে লড়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারির দাবিতেই ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায় নামক এক ব্যক্তি। বিগত সাত বছর ধরে সেই মামলার শুনানি চলছিল। আজ এই মামলায় রায় দিতে পারে শীর্ষ আদালত।
মামলায় সুপ্রিম কোর্টের তরফে নিযুক্ত অ্যামিকাস ক্যুইরি বিজয় হংসরিয়া তার রিপোর্টে সাজাপ্রাপ্ত জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচনে লড়ার উপরে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ছয় বছর থেকে বাড়ানোর পক্ষেই সওয়াল করা হয়। এ বিষয়ে তিনি যুক্তি দেন, সরকারি কর্মী যদি ফৌজদারি মামলায় সাজা পান, তবে তাঁকে চাকরি থেকে বিতাড়িত করা হয়, তাহলে জনপ্রতিনিধিরা সাজা পাওয়ার পর কেন মাত্র ছয় বছর নির্বাচনে লড়তে পারবেন না? তাদের সাজা আরও বেশি হওয়া উচিত, কারণ জনপ্রতিনিধিরাও সরকারেরই কর্মী।