“ চোখ নয় কান দিয়ে দেখেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী” বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এভাবেই অশালীন আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েকে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক বিবৃতি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের লেটারহেডে।বিশ্বভারতীর লেটারহেডে প্রকাশিত ওই তিন পাতার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির নীচে সই রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।সেখানে শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কান দিয়ে দেখেন। কারণ, তাঁকে তাঁর স্তাবকরা যা শোনান, তিনি তাই বিশ্বাস করেন এবং টিপ্পনি করেন।’
বিশ্বভারতীর অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করার পর তিনি জনসমক্ষে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য’ করেছেন বলেও দাবি করা হয়েছে ওই প্রেস বিবৃতিতে। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের জমি-বিতর্কের মধ্যেই সোমবার তাঁর শান্তিনিকেতনের বাসভবনে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে সেখান থেকে তারপর মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর শিক্ষক, পড়ুয়াদের একাংশের সঙ্গে বৈঠক করে নাম না বিশ্ববিদ্য়ালয়ের উপাচার্যকে নিশানা করেছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেউ ক্ষমতার বুলডোজার চালালে আমি ছাত্রদের সঙ্গে আছি। পুঁথি পড়ে সব জানা যা না। ঘটনা শুনলাম, কাম্য় নয়। কারও কারও মস্তিষ্কে হৃদয় নেই। জুলুম করছে। সবার সঙ্গে যোগাযোগ থাকবে। ভবিষ্য়তে পথ দেখাবে। ক্ষমতার জোরে বুলডোজার চালালে আমি সঙ্গে আছি।’ ’পাশাপাশি নাম না করে অনুব্রত মণ্ডলের প্রসঙ্গও টেনে আনা হয়েছে ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে। লেখা হয়েছে, ‘আপনার প্রিয় শিষ্য যাঁকে না হলে আপনি বীরভূম ভাবতে পারেন না, তিনিও জেলে। কবে বেরোবেন কেউ জানে না। আগে সাবধান করলে আপনি দুর্নাম থেকে বাঁচতে পারতেন।’
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের লেটারহেডে প্রকাশিত এই প্রেস বিজ্ঞপ্তির পর ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন মহলে। বিশেষ করে রাজ্যের প্রথম সারির এক বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে এহেন বিস্ফোরক মন্তব্য ঘিরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।প্রেস বিবৃতিতে দাবি করা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপককে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে, তাও ‘সর্বৈব ভুল’। তাদের বক্তব্য, ওই অধ্যাপককে শাস্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এবং সেটি নিয়ে ওই অধ্যাপক মামলা করেছেন। অর্থাৎ, বিষয়টি এখনও বিচারাধীন বলেই দাবি বিশ্বভারতীর। পাশাপাশি ছাত্ররাও যদি ক্ষমা চাইত, তাহলে শাস্তি মুকুব হয়ে যেত বলেই বক্তব্য বিশ্বভারতীর।
মুখ্য়মন্ত্রীকে আক্রমণ করতে গিয়ে, বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি, গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডলের প্রসঙ্গ অবধি টেনে এনেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘মাননীয়াকে অনুরোধ করব, যে কান দিয়ে না দেখে, বুদ্ধি দিয়ে বিচার করুন। আজ আপনার মনোনীত মন্ত্রী ও উপাচার্য গারদের ভিতরে। কী করে হল? কারণ আপনি স্তাবকদের কথা শুনে, সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেই বিধ্বস্ত।
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও বলছেন, ‘যখন বিশ্বভারতী বিশ্বকবির মার্গদর্শনে চলে না লিখে, লেখা হয় প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে চলতে অভ্যস্ত, তাতেই বোঝা যায় এটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নয়, বিজেপির আখড়ায় তৈরি রাজনৈতিক চিরকুট। এতে যে শালীনতা থাকবে না, সেটাই স্বাভাবিক। সমস্ত মুখোশ খুলে এরা যেভাবে বিজেপির শাখা সংগঠনের মতো আচারণ করছে, তা অত্যন্ত দুঃখের।’