ছবি কীভাবে পরিবেশ চেতনা গড়ে তুলতে পারে ? অবশেষে সেটাই তুলে ধরল ইবসা এবং ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশন
বেস্ট কলকাতা নিউজ : ছবি! পৃথিবীতে এর থেকে শক্তিশালী গণ যোগাযোগের মাধ্যম বোধহয় আর কিছু নেই। একটা সঠিক ছবি নিমেষে বদলে দিতে পারে একটা মানুষের জীবন। ১৯৪৫ সালের টাইম স্কোয়ারের সেই ছবিটা মনে আছে? আমেরিকার এক নৌ-বাহিনীর নাবিক রওনা হওয়ার আগে নিউ ইয়র্কে টাইম স্কোয়ারে দাঁড়িয়ে ভিড়ের মধ্যে চুমু খেয়েছিলেন তাঁর স্ত্রীকে। আর সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে রেখেছিলেন আলফ্রেড আইজেনস্টেড্ট। প্রেম, ভালবাসা, বিরহের যন্ত্রণা, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা। এই সব অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ছিল ওই একটা ছবিতে।
তাই মানুষকে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে ছবিকেই হাতিয়ার করে নিয়েছিল ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশন এবং ইবসা(IBSA: Indo-British Scholars’ Association)। বিশ্ব পরিবেশ দিবসের পরবর্তী সময়ে পরিবেশ এবং তার স্বাভাবিক বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য গত ১০ জুন ব্রিটিশ ক্লাবে আয়োজন করা হয়েছিল ‘ফ্রোজেন ওয়াইল্ড’-এর। যার মূল বক্তা ছিলেন প্রখ্যাত ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার এবং অপথ্যালমোলজিস্ট, রেটিনা স্পেশালিস্ট সোমদত্ত প্রসাদ।

এই দিন গোটা অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনের প্রেস এবং কমিউনিকেশনের পূর্ব এবং উত্তর পূর্ব ভারতের প্রধান অমিত সেনগুপ্ত। উপস্থিত ছিলেন ইবসার চেয়ারম্যান নন্দিনী রায়। হাজির ছিলেন পূর্ব এবং উত্তর পূর্ব ভারতের ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনার অ্যান্ড্রু ফ্লেমিং। মানুষের হস্তক্ষেপ, প্লাস্টিকের বাড়বাড়ন্ত, আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং দ্রুত গতিতে নগরায়ন কীভাবে প্রতিদিন একটু একটু করে ধ্বংস করছে পৃথিবীকে তা তুলে ধরেন। কেবল এই অনুষ্ঠানে আসার জন্য এক বিশেষ হলুদ কালো টাই কিনেছেন তিনি, নিজের বক্তব্যের পরে সেই কথা জানিয়েছেন নিজে।
ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটি, যুক্তরাজ্যের প্রেসিডেন্ট এবং ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সাইমন হিল। ১৮৪৬ থেকে শুরু করে দীর্ঘ এতগুলো বছর ধরে কীভাবে বন্যপ্রাণ এবং প্রকৃতিকে রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ফটোগ্রাফারের লেন্স, তাও তুলে ধরেন তিনি। সেবেস্টিয়াও সেলগাঁও, অ্যামি ভিতালে, জেমস ব্যালগ থেকে নাওমির মতো বিশ্ববিখ্যাত চিত্রগ্রাহকদের ছবি কীভাবে প্রকৃতির বদলে যাওয়া রূপ ক্যামেরাবন্দি করেছে তাও দেখান।
এরপরেই নিজের ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফারের নানা অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন সোমদত্তবাবু। অমিত সেনগুপ্তের সঙ্গে কথপোকথনের সময় উঠে আসে নানা মজার কাহিনি। নর্থপোলে কীভাবে গলে যাচ্ছে হিমবাহ, ফ্যালকনের আচমকা শিকার তাঁর অভিজ্ঞতায় উঠে আসে আরও নানা গল্প। তাঁর ছবিতে প্রকাশ পায় বন্যপ্রাণ এবং প্রকৃতির সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাও। কথপোকথনের শেষে ছিল প্রশ্ন-উত্তরের পালাও। সোমদত্ত বাবু বলেন, “ভাল ছবির প্রধান বৈষিষ্ট্য হল সেই ছবির জন্য আপনাকে কোনও ক্যাপশন প্রয়োজন হবে না। ছবিটি নিজেই একটা গল্প বলবে।”