পাহাড়ে বন্ধ রয়েছে টয়ট্রেন পরিষেবা, কারণ জানতে চাইলো ইউনেস্কো কতৃপক্ষ
দার্জিলিং : মাসের পর মাস বন্ধ দার্জিলিং-শিলিগুড়ি টয়ট্রেন পরিষেবা । প্রাক পুজো তো বটেই, দুর্গাপুজোর ভরা মরশুমেও গড়ায়নি ট্রেনের চাকা। এবার কালীপুজোতেও বন্ধ থাকছে পাহাড়-সমতলের মধ্যে খেলনা গাড়ির চলাচল। এরকম চলতে থাকলে আগামীতে ইউনেসকোর দেওয়া হেরিটেজ তমকা ধরে রাখাই যে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে, তা একবাক্যে মানছেন সকলে। রেল সূত্রে খবর, ইসনেসকোর তরফে ইতিমধ্যে টয়ট্রেন চলাচল বন্ধের কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে দ্রুততার সঙ্গে পরিকাঠামোর উন্নয়ন ঘটিয়ে টয়ট্রেন চালানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
সাতটি জায়গায় মাটি ধসে যাওয়ায় বিপজ্জনক হয়ে রয়েছে রেললাইন। যে কারণেই বন্ধ রয়েছে দার্জিলিং এবং নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে ট্রেন চলাচল। দ্রুত এই কাজ শেষ করে নভেম্বরের প্রথমে টয়ট্রেন চলাচল শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জলকিশোর শর্মা। তিনি বলছেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত সাতটি জায়গা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। আশা করছি, নভেম্বরের প্রথমদিকে টয়ট্রেন পরিষেবা চালু করা সম্ভব হবে।’
পুজো এবং টয়ট্রেন, উত্তরের পাহাড়ি পর্যটনে কার্যত সমার্থক শব্দ। সে কারণেই পুজোর দিনগুলিতে যাত্রীর ভিড়ে ঠাসা থাকে টয়ট্রেন। সারা বছর জয়রাইডের চাহিদা বেশি থাকলেও এই সময়টায় শিলিগুড়ি -দার্জিলিংয়ের মধ্যে চলাচলকারী টয়ট্রেনের চাহিদাও আকাশছোঁয়া হয়ে যায়। ফলে লক্ষ্মীলাভ ঘটে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের । কিন্তু চলতি বছর বর্ষার মাঝামাঝি থেকেই নিউ জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিংয়ের মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ।
বর্ষার সময় ধসের জেরে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় টয়ট্রেন চলাচল বন্ধ নতুন কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু পুজোর দিনগুলিতে এই পরিষেবা বন্ধ থাকা সাম্প্রতিককালে ঘটেনি। যে কারণে বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ডিএইচআর-কে পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ইউনেসকো। ডিএইচআর ইন্ডিয়া সাপোর্ট গ্রুপের সেক্রেটারি জেনারেল রাজ বসু বলছেন, ‘এই অঞ্চলে পর্যটকরা ছুটে আসেন কাঞ্চনজঙ্ঘা, চা এবং টয়ট্রেনের টানে। এবার পর্যটন ব্যবসায় ৪০ শতাংশ যে ক্ষতি হয়েছে, তার মূলে রয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের খোলা ও বন্ধ হওয়া, বাংলাদেশের অস্থিরতা এবং অবশ্যই টয়ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকা। পুজোর সময় যে ব্যবসা হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোজগার হয় টয় ট্রেনে। আর সেটাই বন্ধ হয়ে আছে, আর এই খবর চলে গেছে ইউনেস্কোর কাছে।