বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে অগ্নিকাণ্ড ও ব্যাপক অশান্তি, এক চরম আতঙ্কে পাহাড়ি জনপদ
নিজস্ব সংবাদদাতা : বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে উত্তেজনা আর আতঙ্ক দানা বাঁধছে। সম্প্রতি খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারার রামেসু বাজার এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় বহু পাহাড়ি পরিবার ঘরছাড়া হয়েছেন। বাজারের চারপাশে এখনো পোড়া ঘরবাড়ির দগ্ধ চিহ্ন স্পষ্ট। আগুনে শুধু মিবু মারমার ঘরই নয়, একের পর এক বসতবাড়ি ও দোকান ছাই হয়ে গেছে। কিছু ঘর টিকে থাকলেও তা আর বসবাস বা মেরামতের উপযোগী নয়।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডে সর্বস্ব হারিয়ে পাহাড়ি মানুষজন আজ চরম অসহায়। কারও চোখে জল, কারও মধ্যে প্রবল রাগ ও ক্ষোভ, আবার অনেকে ভবিষ্যতের অজানা আতঙ্কে ভুগছেন। মিবু মারমা নামের এক ক্ষতিগ্রস্ত বলেন, “কিছুই নাই, সব ছাই। ছাইয়ের ভেতরে ঢুকে যেতে ইচ্ছে করছে… আমার ঘরবাড়ি না পুড়ে, আমাকেও যদি আগুনের মধ্যে দিয়ে দিত, তাহলে এত দুঃখ–কষ্ট সহ্য করতে হতো না।” তাঁর বেদনা আরও গভীর হয়েছে মেয়ের প্রিয় বিড়ালকে আগুন থেকে রক্ষা করতে না পারার কষ্টে।
এমনকি আবার অগ্নিকাণ্ডের পেছনে প্রেক্ষাপটও চরম উদ্বেগজনক। খাগড়াছড়িতে এক পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে ‘জুম্ম ছাত্র জনতা’ সংগঠন অবরোধ কর্মসূচি ডাকে। সেই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গুইমারায় তুমুল বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং পাহাড়িদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এসময় স্থানীয় একটি পক্ষও যুক্ত হয় বলে জানা গেছে। সংঘর্ষের জেরে বাজার জুড়ে সহিংসতা ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্তরা এককাপড়ে দিন কাটাচ্ছেন। খাদ্য, আশ্রয় ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পাহাড়ি জনপদে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, পার্বত্য অঞ্চলের দীর্ঘদিনের অশান্তি নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, আর তার শিকার হচ্ছেন সাধারণ পাহাড়ি মানুষ।

