বিরাট ক্ষমা চাইতে হবে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তকে, অবশেষে বাম নেতা সেলিমের গলায় শোনা গেলো মমতার সুর
বেস্ট কলকাতা নিউজ : ভিনরাজ্যে বাঙালিদের উপর আক্রমণের অভিযোগে গতকাল বুধবার ধর্মতলার লেলিন মূর্তি থেকে মৌলালির রামলীলা ময়দান পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করল বামফ্রন্ট নেতৃত্ব ৷ সেই মিছিল শুরুর আগে ধর্মতলার জমায়েত থেকে বিজেপি ও আরএসএস-কে এক যোগে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন সিপিআইএমের বর্তমান রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ৷

আর সেখানেই বাঙালি ও বাংলা ভাষাকে অপমানের অভিযোগে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার ক্ষমা চাওয়ারও দাবি করলেন তিনি ৷ শুধু তাই নয়, ভিনরাজ্যে এ রাজ্যের মানুষকে আক্রমণ করা হলে, বাংলায় বিজেপিকে শান্তিতে থাকতে দেওয়া হবে না-বলেও এদিন কড়া হুঁশিয়ারিও দিলেন মহম্মদ সেলিম ৷ এদিকে এদিন ধর্মতলায় সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, “হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে ক্ষমা চাইতে হবে ৷ তিনি বাংলা ভাষাকে অপমান করেছেন ৷ সংবিধানে দেশের বিভিন্ন ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে ৷ কোন সাহসে অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, বাংলায় কথা বললে অনুপ্রবেশকারী ! এটা আরএসএসের চূড়ান্ত হিন্দি, হিন্দু, হিন্দুস্তানের নীতির ফলাফল ৷ গণতন্ত্রকে শেষ করে দেশে নয়া ফ্যাসিবাদের উত্থান হচ্ছে ৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ইউরোপে যেভাবে অন্য দেশের নাগরিকদের উপর অত্যাচার করা হয়, সেরকমই দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশে ৷ তাই, আমাদের রাজ্যের মানুষ যদি অন্য রাজ্যে আক্রান্ত হয়, তাহলে বাংলায় বিজেপিকে শান্তিতে থাকতে দেব না ৷ মানুষকে ভাগ করলে তার ফল হবে না ৷ ঐক্য তৈরি করতে হবে ৷ সেই কাজ বামপন্থীরাই করবে ৷”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারকে আক্রমণ করে সেলিম এও বলেন, “যেখানে যে রাজ্যে বাঙালি তথা বাংলার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে না-কেন ? কেন চিঠি পাঠানোর হিম্মত রাখছেন না এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ? বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত ভাষা আন্দোলনের কথা বলছেন ৷ আসলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতি করছেন ৷ রাজনীতির স্বার্থে গোটা বিষয়টাকে ব্যবহার করছে ৷”
এরপরেই আরএসএস বিজেপি ও তৃণমূলকে এক বন্ধনীতে রেখে সেলিম বলেন, “বুঝতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আরএসএস এক ৷ এরা সকলেই মানুষের মধ্যে ভয় ধরাতে চাইছে ৷ এই ভয় থেকে মানুষকে মুক্ত করতে হবে ৷ পাড়ায়-পাড়ায় যেতে হবে বলতে হবে মানুষকে ৷” কেন্দ্রের বিজেপিকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করে সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এও বলেন, “সংবিধান অনুযায়ী আমাদের দেশের নাগরিক যেকোনও রাজ্যে যেতে পারেন ৷ কিন্তু, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিরা আক্রান্ত হচ্ছেন ৷ এক রাজ্যের লোক অন্য রাজ্যে গেলে আক্রান্ত হচ্ছেন ৷ তাঁদের আটক করা হচ্ছে ৷ বাংলাদেশি বলে পুশ ব্যাক করা হচ্ছে ৷ মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই সংবিধান অনুযায়ী এক রাজ্যের মানুষ আরেক রাজ্যে যেতে পারেন ৷ তাঁর সুরক্ষার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের ৷ বিজেপি দেশের বৈচিত্রকে শেষ করতে চাইছে ৷ ওরা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে কোনো রকম মান্যতা দেয় না ৷”