বিশ্ব উষ্ণায়নের মাত্রা ক্রমশ বাড়ছে রান্নাঘরের গ্যাস ব্যবহারেও, তুমুল বিতর্কে পরিবেশবিদরা
বেস্ট কলকাতা নিউজ : এখন বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের কারণ হয়েছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং ও জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা। এর প্রভাব থেকে চির নিবৃত্তির কথা ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে আমজনতা প্রত্যেকেই । এর জন্য এমনকি নেওয়া হচ্ছে বহু উদ্যোগও। বিশেষজ্ঞদের দাবি,প্রতিদিনের জীবন চালানোর জন্য আরও উন্নত পদ্ধতির অনুসরণ করা প্রয়োজন কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে এনে। এখনই তবে খুব বড় সমস্যার সম্মুখীন না হলেও সামনের দিন কিন্তু ভয়ানক হতে পারে আমাদের জন্য। এখন প্রশ্ন হল, তার জন্য কি প্রস্তুত আমরা?
সম্প্রতি কিছু গবেষণায় জানা গিয়েছে আমরা যদি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে বাঁচতে চাই, তাহলে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে আমাদের প্রতিদিনের রুটিনে। আর তার জন্য প্রথমেই আমাদের যেটা করতে হবে সেটা হল জীবাশ্ম জ্বালানি অর্থাত্ কয়লা, তেলের জ্বালানি ব্যবহার করা। পরিবেশবিদদের কেউ কেউ গ্যাসের উনুনকে সামনের সারিতে রেখেছেন জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সমস্যার ক্ষেত্রে। মানে আমরা রান্নার জন্য গ্যাস জ্বাললেও প্রকৃতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে!
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে, একটি সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিল ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে সিটি কাউন্সিল। সেখানের প্রাকৃতিক গ্যাসের হুকআপ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সদ্য নির্মিত কিছু আবাসনে। এটা একটা অভূতপূর্ব পদক্ষেপ হিসেবে প্রশংসিত হলেও তুমুল বিতর্ক শুরু হয় এই সিদ্ধান্ত নিয়ে। নির্দিষ্ট গ্যাস সরবরাহ সংস্থা ভালো ভাবে নেয়নি কাউন্সিল-এর এই পদক্ষেপ। ফলে শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে হয় প্রশাসনকেই ।
কিন্তু সব মিলিয়ে, রান্না ঘরই এখন সব চেয়ে বেশি বিতর্কের জায়গা বিশ্ব উষ্ণায়নের ক্ষেত্রে। কারণ আমরা বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রাকৃতিক গ্যাসের ওভেন ব্যবহার করি রান্নার জন্য। বরাবরই প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থাগুলি কয়লা এবং তেলের বিকল্প হিসাবে রান্নাঘরে গ্যাস ব্যবহার করতে বলে এসেছে আমাদের। তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিকল্পও এসেছে আরও অনেক। জেনে রাখা ভালো আমাদের রান্নাঘরের গ্যাস সিলেন্ডারে যে গ্যাস ব্যবহার করা হয় তা মূলত মিথেন বা CH4। এটা পুড়ে যাওয়ার পর পরিণত হয় CO2-তে । যা থেকে অন্যান্য জীবাশ্ম জ্বালানির তুলনায় নির্গমন হয় কম CO2 । তবে এতে একেবারেই কোনও সমস্যা নেই এটা ভাবারও কোনো কারণ নেই।
কেন না, আজকাল বেশির ভাগ বাড়ি, হোটেল, রেস্তোরাঁয় রান্না সারা হয় প্রাকৃতিক গ্যাস দিয়েই। তাহলে একটু একটু করে কত সংখ্যার CO2 নির্গত হচ্ছে ভাবলে অস্বস্তিতে ফেলবে পরিসংখ্যানই । তাছাড়া এই গ্যাসে রয়েছে মিথেন যা পৃথিবীর উত্তাপ অনেক বেশি বৃদ্ধি করে খুব শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইডের থেকেও। এভাবেই বিন্দু বিন্দু দূষণ সিন্ধুতে পরিণত হয়ে ধংস করতে পারে আমাদের ভবিষ্যত্।