মারাত্মক সব অভিযোগ এ রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবের বিরুদ্ধে! জুনিয়র ডাক্তারদের তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে ফের চিঠি অপসারণ চেয়ে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ঘটনার পর থেকে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবের অপসারণ চেয়ে সুর সপ্তমে চড়িয়েছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। যদিও এখনও পর্যন্ত স্বাস্থ্য সচিবের অপসারণের দাবিটিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমল দিতে নারাজ। এবার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরসের। সেই চিঠিতে স্বাস্থ্য সচিবের বিরুদ্ধে মারাত্মক সব অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। আবারও সেই সঙ্গে তাঁর অপসারণেরও দাবি জানিয়েছে চিকিৎসকদের এই সংগঠনটি।
স্বাস্থ্য সচিবের বিরুদ্ধে! মারাত্মক সব অভিযোগ: রীতিমতো তালিকা তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাস্থ্য সচিবের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ জানিয়েছেন জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরসের নেতারা। HFNO মেশিন কেনা সংক্রান্ত অভিযোগ থেকে শুরু করে আরজি কর মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনা সংক্রান্ত অভিযোগ, আরজি করে দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যপালের কাছে জেপিডির অভিযোগ, স্কিল ল্যাবের যন্ত্রপাতি কেনা সংক্রান্ত অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিতে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরসের তরফে লেখা হয়েছে, “স্বাস্থ্য দফতরের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক আধিকারিক স্বাস্থ্য সচিব। বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন নিম্নোক্ত প্রতিটি বিষয় যথাসময়ে তাঁর গোচরে এনেছিল। বহু তথ্য RTI করে পাওয়া গেছে। কিন্তু দুর্বোধ্য কারণে তিনি নীরব থেকেছেন বা অভিপ্রেত প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছেন। যদি তিনি ও তাঁর অফিস যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন তাহলে হয়তো স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান / মেডিকেল কাউন্সিল / হেল্থ ইউনিভার্সিটি / রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের এই পচা-গলা অবস্থা তৈরি হতো না, অভয়ার হত্যাকাণ্ড হয়তো আটকানো সম্ভব হতো। তাঁর বিগত সময়ের কিছু কার্যাবলী ও উদ্ভূত বিভিন্ন প্রশ্নের বিস্ময়কর নীরবতা সংগত কারণেই অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। যদি তিনি দায়বদ্ধ না থাকেন তাহলে দায়ী কে? তিনি বলুন প্রকাশ্যে। এরপরে নৈতিক কারণে এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে তাঁর চেয়ারে থাকা স্বাভাবিক যুক্তিবোধের বাইরে। আমাদের বোধের বাইরে যে কেন আপনি স্বাস্থ্য সচিবের অপসারণের প্রশ্নে অনড় এবং অনমনীয়?”
স্বাস্থ্য সচিবের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরসের:আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভয়ঙ্কর দুর্নীতি ও সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে স্বাস্থ্য সচিবকে জানানো হয়। পুলিশের অ্যান্টি-কোরাপশন শাখা তার কাছে চিঠি পাঠায়। কিন্তু তবুও তদন্ত সেভাবে এগোয়নি। জানা যায় সন্দীপ ঘোষের বদলি দু’দিনের মাথায় আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসার নোট সিটে স্বাস্থ্য সচিবই ছিলেন প্রস্তাবক। উল্লেখ্য ,২০২৩ সালে অবৈধ কোভিড কোটার বিনিময়ে এবং গ্রামীণ এলাকার নির্ধারিত ডেফিনেশনের বাইরে গিয়ে মেডিকেল কাউন্সিলের বিশেষ প্রভাবশালী এক সদস্য এবং প্রতাপান্বিত ছাত্র নেতাকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম ।
এদিকে হেল্থ ইউনিভার্সিটি ও তাঁর পূর্বতন উপাচার্যের বিরুদ্ধে অজস্র অভিযোগ এবং হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে এবং মেডিকেল শিক্ষার ভয়ঙ্কর অবনতি নিয়ে স্বাস্থ্য সচিবকে বারবার বলা হয়। তবু বিষয়টি নিয়ে কোনও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তিনি অনিচ্ছা দেখিয়েছেন। স্বাস্থ্য সচিবের বিরুদ্ধে এমন একগুচ্ছ অভিযোগ এনে ফের তাঁর অপসারণ চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস।