শিলিগুড়ির বাজারে ক্রমশ ছেয়ে গেছে চীনের রসুন
শিলিগুড়ি : একেবারে ধবধবে সাদা। খোসাগুলোও বেশ নরম। ভারতীয় রসুনের সঙ্গে ফারাকও চোখে পড়ে অনায়াসে। তবু সস্তার লোভে ক্রেতাদের চোখ টানে ‘নিষিদ্ধ’ চিনা রসুন । আর ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই রোজ চোরাপথে নেপাল হয়ে এই চিনা রসুন ঢুকছে উত্তরবঙ্গে । কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এখান থেকেই ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
সূত্রের খবর, প্রতি রাতে সীমান্তের মেচি নদী পেরিয়ে ৬০-৭০টি ট্র্যাক্টরে করে বস্তা বস্তা চিনা রসুন নকশালবাড়িতে ঢুকছে। সেখান থেকে ভোরের দিকে সেগুলি পণ্যবাহী গাড়িতে করে শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারে পৌঁছাচ্ছে। সেখান থেকে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির পাশাপাশি চলে যাচ্ছে ভিনরাজ্যেও। ব্যবসায়ীদের একটি অংশ জানাচ্ছে, বেশিরভাগ হোটেল, রেস্তোরাঁয় বিষে ভরা এই রসুনের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।
চিনা রসুন নিয়ে সাবধানবাণী শোনাচ্ছেন চিকিৎসকরাও। কারণ চিনা রসুন চাষে বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। এই রসুন খেলে স্নায়ুর রোগ তো বটেই, হতে পারে লিভার, কিডনির রোগও। আশ্চর্যের বিষয়, দীর্ঘদিন এই পথে নেপাল থেকে চিনা রসুন পাচার হলেও পুলিশ বা প্রশাসন কেউই সেই অর্থে ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। কার্সিয়াংয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক রায় সবটা শুনে বলছেন, ‘এই ধরনের চোরাকারবারের খবর জানা ছিল না। এটা মূলত এসফোর্সমেন্ট শাখা দেখে। আমরাও খোঁজ নেব।’
শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের বাজারে এদেশের রসুন বর্তমানে ৩৮০-৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পরিমাণে কম নিলে দাম আরও একটু বেশি পড়ছে। সেখানে চিনা রসুন কেজি প্রতি ২৩০ টাকার কাছাকাছি দরে বিকোচ্ছে। এদিকে চিনা রসুনে ছত্রাকের সংক্রমণ ধরা পড়ায় ২০১৪ সালে তা আমদানি করা বন্ধ করে ভারত। তারপর থেকে চোরাগোপ্তাভাবে ভারতের বাজারে ছেয়ে যাচ্ছে এই রসুন। নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ির নেপাল সীমান্ত লাগোয়া বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, পুরো কারবারই চলছে রাতের অন্ধকারে। রসুনের সঙ্গে চিনা আপেল, নাসপাতিও অবৈধভাবে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করেছে।