সিএএ-তে বাংলাদেশের এই বাসিন্দা পেলেন ভারতের নাগরিকত্ব
বেস্ট কলকাতা নিউজ : নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন বা সিএএ-র অধীনে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া শুরু হয়ে গেল অসমেও। উত্তর পূর্ব ভারতের এই রাজ্যে সিএএ-র অধীনে প্রথম নাগরিকত্ব পেলেন বাংলাদেশ থেকে আসা এক ব্যক্তি, দুলন দাস। তবে, দুলন বা তাঁর পরিবার বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে ভারতে আসেননি। তাঁর বয়স এখন ৫০ বছর। ১৯৮৮ সালেই বাংলাদেশের সিলেট থেকে অসমের শিলচরে এসে আস্তানা গেড়েছিল দুলনের পরিবার। দুলন জানিয়েছেন, মঙ্গলবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে তাঁকে একটি বার্তা পাঠানো হয়েছে। তাঁকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে, সেই বার্তায় তাঁকে গুয়াহাটির আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে নাগরিকত্বের শংসাপত্র সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
সিএএ আইন পাশ হওয়ার চার বছর পর, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে এই আইন জারি হয়। আইনের বিভিন্ন নিয়মগুলি জানানো হয়। তারপর, গত এপ্রিল মাসেই ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন দুলন দাস। দুলন জানিয়েছেন, সিলেটে তাঁদের পরিবারের উপর একের পর এক হামলা হয়েছিল। এরপর, ১৯৮৮ সালে অসমে পালিয়ে এসেছিল তার পরিবার। ১৯৯৬ সাল থেকে নিয়মিত অসমে ভোট দিচ্ছেন দুলন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। প্রত্যেকের আধার কার্ডও আছে। কিন্তু, তাঁরা ১৯৭১ সালের পর ভারতে এসেছিলেন। তাই, অসমে জাতীয় নাগরিকপুঞ্জ বা এনআরসি চালু হওয়ার সময়, সেই তালিকায় জায়গা পাওয়া কঠিন ছিল দুলন ও তার পরিবারের। শিলচরের এক আইনজীবী তাঁকে এনআরসির জন্য আবেদন না করে সিএএ-র জন্য অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
ভোটার কার্ড, আধার কার্ড ছাড়াও দুলনের কাছে আরও বেশ কিছু ভারতীয় নথি রয়েছে। তাঁর দুই সন্তানেরই জন্ম হয়েছে ভারতেই। ২০০০-এর শূন্য দশকের গোড়ায় শিলচরে তিনি কিছু জমিও কেনেন। সেই জমির দলিল ছিল। ওই সময়ই তিনি ড্রাইভিং লাইসেন্সও পেয়েছিলেন। নাগরিকত্বের আবেদন করার পর, পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় দুলন দাস, সিলেটে তাঁদের জমির মালিকানার দলিল দিয়েছিলেন। সমস্ত কিছু যাচাই-বাছাইয়ের পর, অবশষে তাঁকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে, তারপরও সমস্যা দূর হয়নি দুলন দাসের। তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, নাগরিকত্বের শংসাপত্র গ্রহণের জন্য ৩০০ কিলোমিটার দূরে গুয়াহাটিতে পাড়ি দেওয়া দুলন দাসের পক্ষে কঠিন। তাই অন্য কীভাবে তা গ্রহণ করা যায়, তার খোঁজখবর করছেন তাঁরা।
দুলনের আইনজীবী জানিয়েছেন, অসম থেকে সিএএ-র অধীনে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত মোট আটজন আবেদন করেছেন। তবে, তাদের মধ্যে দুজন আবেদন প্রত্যাহার করেছেন। বাকি ছয়টি আবেদন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পর্যালোচনা করছে। এর মধ্যে চারটি ক্ষেত্রে আবেদনকারীরা শীঘ্রই নাগরিকত্ব পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।