সুজয়কৃষ্ণকে নিয়ে এবার আদালতের প্রশ্নের মুখে মোক্ষম চাপে SSKM কতৃপক্ষ
বেস্ট কলকাতা নিউজ : কোন কোন প্রভাবশালী বা হাই-প্রোফাইল অভিযুক্ত ভর্তি রয়েছেন SSKM হাসপাতালে? হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে রাজ্যকে। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি SSKM হাসপাতালকেও এই সমস্ত অভিযুক্তদের স্বাস্থ্য নিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ। তাঁদের কতদিন এবং কী ধরনের চিকিৎসা লাগবে? সবটা রাজ্যকে আদালতে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। এই অভিযুক্তদের কতদিন হাসপাতালে থাকতে হবে? সেটাই SSKM কে জানাতে হবে হলফনামায়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২৪ জানুয়ারি।
প্রসঙ্গত, SSKM এ শিশুদের জন্য বরাদ্দ বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ। সেই অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। মামলাকারীর তরফে আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত সওয়াল করেন, “এসকেএম হাসপাতাল এজেন্সির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর সকলের সেফ জোন হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের চিকিৎসা ব্যহত হচ্ছে।” তাতে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “কেন আছেন?”
ইডি-র তরফে এদিন আদালতে জানানো হয়, বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠ স্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। মামলাকারীর তরফে অভিযোগ করা হয়, যাঁরা ভর্তি রয়েছেন, তাঁরা কেউ ‘Life – Support – System’ এ নেই। ঘুরেফিরে বেড়াচ্ছেন। প্রায় স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন।
তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, “এই ধরনের অভিযোগ সত্যি হলে, এটা মারাত্মক অভিযোগ।” মামলাকারীর তরফে আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত বলেন, “বর্তমানে বন মন্ত্রী, এর আগে মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিম সকলে এসএসকেএমকে সেফ হোম বানিয়ে ফেলেছে। ইডি জুলাই থেকে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের ভয়েস নিতে চেয়ে পারছে না।”
প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, “তবে তো প্রভাবশালী দের জন্য আলাদা ওয়ার্ড বানাতে হয়।” ইডি আদালতে জানায়, ” আমাদের কাস্টডি শেষ হলে, জেল কাস্টডিতে পাঠানো হয় অভিযুক্ত দের। সেই ক্ষেত্রে জেল সুপার মনে করলে অন্য হাসপাতালে পাঠায়। আলিপুর জেলের ক্ষেত্রে তা এসএসকেএমে স্থানান্তর করা হয়।”
কেন্দ্রের সলিসেটর জেনারেল বিল্বদল ভট্টাচার্য বলেন, “কোন বন্দির ক্ষেত্রে জেল কোড অনুযায়ী, জেলের ডাক্তার ও সুপার মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।” তখন বিচারপতি বলেন, “মানে আপনারা বলতে চাইছেন, এটা প্রভাবশালী দের সেফ হেভেন?”
SSKM ডিরেক্টর সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের শারীরিক অবস্থা নিয়ে রিপোর্ট জমা দেবেন ২৪ জানুয়ারির মধ্যে। পাশাপাশি সব পক্ষকে হলফনামা আকারে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। প্রসঙ্গত, SSKM যে প্রভাবশালীদের ‘সেফ হোম’ হয়ে গিয়েছে, তা নিয়ে আগেও বিস্তর অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। এদিনে হাইকোর্টের নির্দেশের পর সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “SSKM রাজ্যের গর্বের হাসপাতাল। সেই জায়গা থেকে এখন তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের হোম হয়ে উঠেছে। এখন এটা চিকিৎসার জায়গা নয়।”