স্ত্রী-মেয়েকে শাবল দিয়ে খুন করে চরম এক পদক্ষেপ চন্দননগরের এক প্রৌঢ়ের
বেস্ট কলকাতা নিউজ : স্ত্রী ও কিশোরী মেয়েকে শাবল দিয়ে খুন করার পর নিজেকে শেষ করে দিলেন প্রৌঢ় । বুধবার রাতে চরম মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির চন্দননগর কলুপুকুর গরেরধার এলাকায় । মৃত ব্যক্তির নাম বাবলু ঘোষ (৬২), স্ত্রী প্রতিমা ঘোষ (৪৬) ও মেয়ে পৌষালি ঘোষ (১৩)। এদিকে প্রতিবেশীদের সূত্রে খবর, পুলিশ রাত ১২ টার পর তিনজনকে উদ্ধার করে চন্দননগর হাসপাতালে পাঠায় । চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন তাঁদের । এরপর একই পরিবারের তিন সদস্যের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয় ৷ কী কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনা খতিয়ে দেখছে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা শাখা।
এ বিষয়ে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান , “গতকাল রাত ১১ টা ৩০ মিনিটে স্থানীয় মানুষ ওই বাড়ির জানলা দিয়ে উঁকি মেরে দেখে কোনও সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না । পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তারা চন্দননগর থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে দেখে, বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় স্ত্রী ও মেয়ের দেহ পড়ে রয়েছে। স্বামীকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় ।”
তিনি আরও বলেন, “লোহার রড বা শাবল দিয়ে আঘাত করে স্ত্রী ও মেয়ে খুন করা হয়েছে । তবে কী কারণে এই ঘটনা সেটা এখনই পরিষ্কার করে বলা যাচ্ছে না । শোনা যাচ্ছে, ঋণের কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে । সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে । পরিবারের কর্তা বাবলু সেভাবে কিছু কাজ করত না । তবে জুয়ার কারবার করত । এর আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাকে । তবে সেটাই আসল কারণ কি না সেটাও খতিয়ে দেখছে চন্দননগর কমিশনারের গোয়েন্দা শাখা । বাইরে থেকে কেউ এই ঘটনা ঘটিয়েছে কি না তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ।”

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, গৃহকর্তা বাবলু আগে টিনের বাক্স কারখনায় কাজ করতেন । পরে টোটো চালিয়েছেন কিছুদিন । বর্তমানে বাড়িতেই একটি দোকান চালাতেন তিনি । সেখানে সাট্টার প্যাড লিখতেন । বাজার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি । সেই থেকে মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকেন বাবলু ৷ তার থেকেই বাবলু এই চরম সিদ্ধান্ত নেন বলে অনুমান প্রতিবেশীদের ।
প্রতিবেশী রাণু চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল ওই পরিবারের ৷ আমরা প্রতিবার এক সঙ্গে পুরী, দিঘা বেড়াতে যেতাম । কিন্তু কী কারণে এই ঘটনা ঘটল বুঝতে পারছি না । রাতে ফোন করছিলাম বন্ধ ছিল ৷ তারপর কাঁচ ভেঙে দেখা যায় এই অবস্থা ৷ শেষ এক সপ্তাহ আগে দিদির সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল ৷ সংসারে অশান্তি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি কোনওদিন ।”
বাবলুর জুয়ার কারবারের সঙ্গী মুধুসূদন অধিকারী আরোও বলেন, “লোটোর কারবার করতাম । আমার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকার কারণে আমার কাছ থেকে ৬ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিল । তার মধ্যে দু’লক্ষ টাকা শোধ দিয়েছিল । আমার সঙ্গে সাত আট বছরের যোগাযোগ । সম্পর্ক ভালোই ছিল । বর্তমানে সাট্টার কারবার করত বাড়িতেই । গতকালই আমি কথা বলে গিয়েছি । আমার মতো অনেকের কাছে টাকা ধার নিয়েছিল বাবলু।”