২১ জুলাই এবার দেশের রাজনৈতিক আঙিনায় রাজ্য ছাড়িয়ে, মুখ্যমন্ত্রী কী বলবেন একুশের বক্তৃতায়? সেদিকেই নজর সকলের
বেস্ট কলকাতা নিউজ : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল বিধানসভা নির্বাচনে অভাবনীয় জয় পেয়েছে এই বছরই। কিন্তু এখনও ঢের বাকি লোকসভা নির্বাচনের। তবে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে তৃণমূল কংগ্রেস ইতিমধ্যেই নেমে পড়েছে ময়দানে। সেই লক্ষ্যেই আজ, তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে একুশে জুলাইয়ের দিনটির গুরুত্ব।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ একুশের মঞ্চকে ব্যবহার করে গোটা দেশের মানুষের কাছে কী বার্তা দেন এখন সকলের নজর সেদিকেই।এদিকে নির্বাচনের প্রচারে তৃণমূল সুপ্রিমো বারবার বলেছেন তাঁর দল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে আগামী দিনে দেশ বাঁচানোর ক্ষেত্রে। সেক্ষেত্রে মোদি বিরোধী লড়াইয়ের যে জোট বা ঐক্যবদ্ধ লড়াই প্রয়োজন তার নিউক্লিয়াস তৈরি হতে পারে এদিনের সভা থেকেই।
ইতিমধ্যেই গোটা দেশজুড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর পারস্পরিক আলোচনার মধ্যে দিয়ে একটা বোঝাপড়ার আবহ তৈরি করার কাজ শুরু করেছেন। একইভাবে আলোচনা চলছে দলের প্রবীণ নেতা মুকুল রায় ও যশবন্ত সিনহার মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও।বাস্তবে এই উদ্যোগ মোদি বিরোধী জোটের রূপ নেয় কি না তা বোঝার জন্য সময় লাগবে আরো কিছুটা। তবে এদিনের এই সমাবেশ যে পরস্পরকে কাছে আনার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই । সবচেয়ে বড় কথা এদিন দিল্লিতে তৃণমূল কংগ্রেসের একুশে উদযাপনের মঞ্চে হাজির থাকবেন একাধিক বিরোধীদলের মুখ, রাজনৈতিকমহল মনে করছে তা আগামী দিনে বড় ঐক্যের পথকে প্রশস্ত করতে পারে বলেও।
সূত্রের খবর, আজ বেলা ২ টোয় তৃণমূল সুপ্রিমো বক্তব্য রাখবেন দলের ‘শহিদ তর্পণ’ কর্মসূচিতে। এরাজ্যের প্রায় সব বুথেই বড় পর্দায় পৌঁছে যাবে কলকাতা থেকে তাঁর এই ভাষণ। সেই সঙ্গে একই ভাবেও মমতার একুশের ভোকাল টনিক পৌঁছবে রাজ্যের বাইরেও। বিধানসভা ভোটে বিপুল জয়ের পরে মূলত দেশের রাজনৈতিকমহলে তৃণমূল চর্চায় রয়েছে বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছেন এই সাফল্যের সূত্রেই। এই প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা এই কর্মসূচি থেকে তিনি লোকসভা ভোটের ঐক্য-বার্তা দিতে পারেন বলেও।
প্রথমে ঠিক ছিল ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের সমাবেশ থেকেই অনুষ্ঠিত হবে এবার একুশে উদযাপন৷ কিন্তু রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের যাবতীয় পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেয়। শাসক হিসাবে তাই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এবার তাই ভার্চুয়ালি সভা হচ্ছে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের বদলে। কিন্তু ভার্চুয়াল সভা হলেও তৃণমূল কংগ্রেস তার গুরুত্বকে এতটুকু ছোট করে দেখতে রাজি নয়।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষ মুক্তি চাইছেন দেশের শাসক অর্থাৎ বিজেপির সর্বগ্রাসী শাসন থেকে।তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় বিজেপির আগ্রাসনকে আটকে দিয়েছেন। এবার তাঁর লক্ষ্য দিল্লি। আজ মুখ্যমন্ত্রী দেশ বাঁচানোর লড়াইয়ের ডাক দেবেন কলকাতা থেকেই। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যাবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। এদিকে আজ যাঁরা মূল্যবৃদ্ধির গ্রাসে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বীতশ্রদ্ধ, যাঁরা দেশের ভ্রান্ত কৃষিনীতি-শ্রমনীতি ও সব বিক্রি করে দেওয়ার প্রয়াসের প্রতিবাদ করতে চান তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য শুনে অবশ্যই অনুপ্রাণিত হবেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, অসম, ত্রিপুরা, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যও আজকের পর থেকে এটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে মোদি বিরোধী লড়াইয়ের ক্ষেত্রে।