৫০ % পর্যন্ত আর্থিক ভর্তুকি দেওয়া হবে আদা-রসুন চাষে , অবশেষে আত্মনির্ভরতার এক বিরাট পরিকল্পনা এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : রাজ্যের কৃষকদের আদা-রসুন চাষে উৎসাহিত করা হোক ৷ কয়েকদিন আগেই নবান্নের বৈঠকে রাজ্য় প্রশাসনকে সেই পরিকল্পনার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের কয়েকদিনের মধ্যে সেই নিয়ে তৎপরতা শুরু করেছে প্রশাসন ৷ নবান্ন সূত্রে খবর, দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় এখন থেকে আদা ও রসুন চাষে জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার । কৃষকদের উৎসাহ দিতে নতুন প্রকল্প আনা হচ্ছে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দফতরের তরফে । এই প্রকল্পের লক্ষ্য হল— কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও ভর্তুকি দিয়ে আদা ও রসুন চাষে আগ্রহী করে তোলা এবং রাজ্যে এই ফসলের উৎপাদন বাড়ানো ।

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের অনেক আগে থেকেই আমরা এই বিষয় নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছিলাম । তবে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর রাজ্য সরকারের তরফে একটি নির্দিষ্ট প্রকল্প তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । এই প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী কৃষকদের 50 শতাংশ পর্যন্ত আর্থিক ভর্তুকি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে । খুব শীঘ্রই এই নিয়ে অর্থ দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে । অর্থ দফতরের অনুমোদন পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।”

গত মাসে মুখ্যমন্ত্রী একটি প্রশাসনিক বৈঠকে আদা-রসুন চাষ বাড়ানোর কথা বলেন এবং উপযুক্ত জমি খুঁজে তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করতে বলেন । সেই অনুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গের কিছু জায়গায় ‘গরুবাথান’ জাতের আদার চাষ শুরু করতে চাইছে রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং উদ্যানপালন দফতর । খুব ভালো মানের এই আদা মূলত উত্তরবঙ্গে চাষ করা হয় ।

আবার দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় এর পরীক্ষামূলক চাষ করে সুফলও মিলেছে বলে খবর । বাঁকুড়ায় এই আদার ফলন ভালোই হচ্ছে । এই প্রসঙ্গে এক কৃষক উৎপল মহাপাত্র জানান, তিনি শীতের আগে বীজ বপন করে প্রতি একর জমিতে প্রায় ৬০ কুইন্টাল আদা পেয়েছেন ৷ এই আদা খুব দ্রুত বিক্রি হয়ে যায় । বাঁকুড়ার ফলাফলকে কাজে লাগিয়ে অন্যান্য জেলায় কৃষকদের উৎসাহিত করতে চাইছে রাজ্য সরকার ।

এদিকে রাজ্য প্রশাসনের দাবি, শুধু মাঠে নয়, কৃষকদের বাড়ির উঠোনে ছোট ছোট ব্যাগেও আদা-রসুন চাষ করা যাবে এবং সেখানেও সহায়তা দেবে সরকার । পাশাপাশি, এই ফসল সংরক্ষণের ব্যবস্থাও গড়ে তোলার কথা ভাবছে রাজ্য । এখন রাজ্যে বছরে প্রায় 1 লক্ষ 39 হাজার মেট্রিক টন আদা এবং ৩৮ হাজার ৬২০ মেট্রিক টন রসুন উৎপাদিত হয় । কালিম্পং, দার্জিলিং, গড়বেতা, তেহট্ট, হুগলি ও পূর্ব বর্ধমান এই ফসলের প্রধান উৎপাদক এলাকা । তবে, অগস্ট থেকে নভেম্বর মাসে রাজ্যকে বাইরে থেকে প্রচুর আদা ও রসুন আমদানি করতে হয় ৷ সেই সময় দাম অনেক বেড়ে যায় । তাই সরকারের লক্ষ্য, রাজ্যের মধ্যেই এই ফসলের উৎপাদন বাড়িয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *