আজও এক ঐতিহ্য বহন করে চলেছে ডুয়ার্সের মেটেলি কালীবাড়ি
নিজস্ব সংবাদদাতা : ডুয়ার্সের ইতিহাসের অংশ হিসেবে পরিচিত মেটেলি কালীবাড়ি । চালসা মোড় থেকে একটু উপরে উঠলেই ডুয়ার্সের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জনপদ এই মেটেলি কালীবাড়ি। এখানেই ইতিহাসের গন্ধ গায়ে মেখে দেড় শতাব্দিরও বেশি সময় ধরে পুজো হয়ে আসছে। কথিত আছে একসময় নাকি মেটেলি এলাকাটি ভুটানের অন্তর্গত ছিল। সেই সময় স্থানীয় ভুটানিরাই এই এলাকায় পুজো করতেন। তাই কষ্টি পাথরের এখানকার কালী মূর্তিও অদ্ভূত দর্শনের। মূর্তির চোখ দুটো বড়ো টানা টানা। যা সাধারণভাবে দেখা যায় না।
মেটেলি কালীবাড়ি সম্পাদক বিশ্বজিৎ মণ্ডল জানিয়েছেন, প্রতিমার গঠন দেখে মনে হয় তার মধ্যে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের সংমিশ্রণ রয়েছে। ১৯৬৮ সালে একবার মেটেলি কালীবাড়ির পুরোনো মন্দিরের উপর একটি বড় গাছ পড়ে মন্দির ভেঙে যায়। নতুন করে মন্দির তৈরির সময় মাটি খোদাই করে মাটির প্রদীপ, সিমেন্টের বেদি সহ আরও নানা ঐতিহাসিক সামগ্রী পাওয়া যায়। সিমেন্টের ওই বেদির মধ্যে খোদাই করে লেখা ছিল বাংলা ১২৭৮ সাল। সেই হিসেবেই এবারের পুজো ১৫৩তম। মন্দিরে ১৩৩০ সাল খোদাই করে লেখা একটি খাঁড়াও পাওয়া গিয়েছে। ওটা দিয়েই একসময় বলি দেওয়া হত।
১৯৮৩ সালে মন্দির চত্বর খুঁড়ে একটি সিমেন্টের পিলার পাওয়া যায়। ভয়ে আর সেই পিলার তোলেননি মন্দির কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে সেটিকে প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। ৬৪ ডেসিমেল জমির উপরে থাকা কালীবাড়ির অজানা ইতিহাস উদঘাটনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। সরকারিভাবে মেটেলি কালীবাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণার দাবিও জানানো হয়েছে। পুজোর সময় ছাড়াও সারা বছর মেটেলি কালীবাড়িতে দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক আসেন পুজো দিতে। মেটেলি কালীবাড়ির কোষাধ্যক্ষ পলাশ কুণ্ডু, সভাপতি দিলীপ গুহ রায় বলেন, মেটেলি কালিবাড়ির সঙ্গে এখানকার জনগণের আবেগ জড়িত। যাবতীয় নিয়মনিষ্ঠা মেনে এ কালীবাড়ির পূজো হয়। কালী বাড়ির ঐতিহ্য সেই জন্য আজও মানুষ মনে রেখেছে। কালীবাড়ির বিভিন্ন ইতিহাস নিয়ে এখনো আলোচনা হয়।