মৌলবাদীদের প্রবল তাণ্ডব বাংলাদেশে, চরম আক্রান্ত হিন্দুরা, ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননা , ক্ষোভে ফুঁসছেন এপার বাংলা নিবাসী একাত্তরের ভারতীয় এই মুক্তিযোদ্ধা
বেস্ট কলকাতা নিউজ : চরম অশান্তকর এক পরিস্থিতি বাংলাদেশ। সেখানে এখন শুধুই চলছে ভারত বিরোধিতা আর হিন্দু-নিধন যজ্ঞ! পদদলিত করা হচ্ছে ভারতের তেরঙা জাতীয় পতাকাকেও । অথচ এই বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্যই জীবন উৎসর্গ করেছেন হাজার-হাজার ভারতীয় সেনা। সেই সেনা দলেরই সদস্য হয়ে সমরেন্দ্র কুমার মণ্ডলও নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়ে গিয়েছিলেন। ভারতের এই অবদানের কথা বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসন ও প্রজন্মের ভুলে যাওয়া দেখে তিনি আজ বড়ই বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। শরীর বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত হলেও দেশের তেরঙা জাতীয় পতাকার অবমাননা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া এই ভারতীয় সেনানী।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে থাকা ভারতীয় সেনা দলের সদস্য সমরেন্দ্র কুমার মণ্ডলের বাড়ি বর্তমানে পূর্ব বর্ধমানের কালনা শহরের মিশন পাড়ায়। তিনি ও তাঁর পরিবার বংশ পরম্পরায় খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বী। তবুও বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর মৌলবাদীদের অত্যাচার ও ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননা সমরেন্দ্র বাবু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। বছর ৭৩-এর প্রাক্তন ভারতীয় সেনাকর্মী সমরেন্দ্র কুমার মণ্ডল বাংলাদেশের ভারত বিরোধিতা দেখে স্তম্ভিত। একইসঙ্গে তিনি বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভ অকপটে তিনি উগরেও দিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সমরেন্দ্র কুমার মণ্ডল বলেন, “২২ বছর বয়সে আমি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসাবে যোগদান করি। সেনা হিসাবে কর্মজীবন শুরু হয় জম্মু কাশ্মীরে। তারপর ১৯৭১ সালে তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে আমি যোগদান করি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে। ভারতীয় সেনা হিসাবে ‘মিশন ক্যাকটাস লিলির’ শরিক হই। বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য আমি এবং আমার মতো আরও হাজার হাজার ভারতীয় সেনা নিজেদের জীবনকে বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে লড়ে যাই। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। অথচ ভারতের এই অবদান আজকের বাংলাদেশ অস্বীকার করছে। এমনকী ভারত বিদ্বেষ জাহির করতে বাংলাদেশে ভারতের তেরঙা জাতীয় পতাকার অবাননা করাও চলছে। বাংলাদেশের এই বিশ্বাসঘাতকতা ও ভারত বিদ্বেষী মনোভাব কিছুতেই মানা যাচ্ছে না।”
শুধু তাই নয়, বর্তমানে বাংলাদেশে ঘটে চলা হিংসা হানাাহানি ও অরাজকতার ঘটনা টেলিভিশনের পর্দায় দেখে নিজের রাগ চেপে রাখতে পারেননি সমরেন্দ্রবাবু। ক্ষুব্ধ কন্ঠে তিনি বলেন, “ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সদস্য হয়ে আমি আমার দেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। যে কোনও দেশের জাতীয় পতাক সেই দেশের বাসিন্দাদের কাছে গর্বের ও মর্যাদার প্রতীক। ভারতীয় সেনারা যে দেশটাকে স্বাধীন করার জন্য জীবন দিল, সেই দেশে আজ ভারতের জাতীয় পতাকার অপমান হচ্ছে, ভারতের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা হচ্ছে।”