অভাবের সংসার , চরম খিদের জ্বলায় নিজের সন্তানকে তিস্তা নদীতে ভাসাতে গেলেন মা

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : কাজ ছিল না দীর্ঘদিন। ঘরে টাকা নেই। খাবার নেই। দেড় বছরের সন্তান কি আর সে সব বোঝে! খিদের জ্বালায় অঝোরে কেঁদেই চলেছে সে। নিরুপায় মা। সোজা সন্তানকে নিয়ে ভাসিয়ে দিতে গেলেন নদীতে। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি ব্লকে। জানা গেছে তিস্তা সেতু সংলগ্ন মরিচবাড়ি এলাকায় বাস ওই পরিবারের।

স্বামীর কাজ না থাকায় অর্থের অভাব বাড়িতে। ঘরে নেই খাবার। বিপুল বাওয়ালি পেশায় কাঠ মিস্ত্রী। বাড়িতে রয়েছে তার তিন বছরের এক কন্যা সন্তান ও দেড় বছরের পুত্র সন্তান। সোমবার সকালে বিপুল বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর সন্তানদের নিয়ে একাই ছিলেন স্ত্রী সীমা বাওয়ালি। খিদের জ্বালায় সকাল থেকেই কান্না জুড়ে দিয়েছিল কোলের সন্তান। উপায় না পেয়ে দেড় বছরের পুত্র সন্তানকে ভরা তিস্তায় ফেলে দেন নিরুপায় মা। নদীর ধারে সেই সময় উপস্থিত ছিলেন গ্রামবাসীরা। তারাই শিশুকে উদ্ধার করে। সীমাকে এরপর ধরে নিয়ে যায় গ্রামের লোকজন। তিনি জানান, সপ্তাহ দুয়েক ধরে কোনও কাজ ছিল না বিপুলের। ঘরে খাবারের অভাব। খিদের জ্বালায় কান্নাকাটি করছিল ছোট্ট সন্তান। এই নিয়ে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে অশান্তিও হয়। এরপর বিপুল কাজের খোঁজে বাড়ির বাইরে যান, তখন সীমা তার পুত্র সন্তানকে নিয়ে বাড়ি লাগোয়া তিস্তা নদীতে গিয়ে শিশুটিকে নদীতে ফেলে দেন বলে অভিযোগ।

সীমা বলেন, “ওর বাবা তো বেরিয়ে গেল। ঘরে দুধ নেই। ছেলের কান্না আমাকে সারাদিন ধরে সহ্য করতে হবে। তাই বললাম চল তোকে নদীতে দিয়ে আসি। কেউ তো আর আমাকে খাবার দিয়ে যাবে না।” প্রশ্ন উঠছে, সরকারের এত জনমুখী প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল! ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে একটি টিম যাচ্ছে ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *