এ যেন সিনেমার গল্পকেও হার মানবে, ‘সুবোধ বালক’ হওয়া হল না সুবোধ ডাকাতের, চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে পুলিশেরও
বেস্ট কলকাতা নিউজ : ভোটের উত্তাপ, সরকারে গঠনের উত্তাপে গোটা দেশে মেতেছিল গত কয়েকদিন। অন্য কোনও খবরে কারও খুব একটা যে নজর ছিল এমনটা জোর দিয়ে বলা যায় না। মোড় ঘুরল ৯ জুন। রানিগঞ্জে সোনার দোকানে ডাকাতি। আবার আবার টার্গেট সোনার দোকান! রানিগঞ্জের রেশ কাটার আগেই হাওড়ার ডুমুরজোলাতেও একই কাণ্ড। ডাকাতের বন্দুকের নলের মুখে সোনা ব্যবসায়ীরা। তদন্ত শুরু হয়ে যায়। গত বছরের একাধিক সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনার কথা আবারও প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। এর মধ্যেই এল এমন কিছু তথ্য যা দুঁদে গোয়েন্দাদের চোখও কপালে তুলে দিয়েছে। এমন তথ্য যা হার মানাতে পারে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের গল্পকেও। একেবারে ‘জুয়েল থিফ’।
রানাঘাট, পুরুলিয়া, শক্তিগড়, ব্যারাকপুর, রানিগঞ্জ, ডুমুরজোলা। গত কয়েক মাসে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ধরনটা সব ক্ষেত্রেই প্রায় একই রকম। ক্রেতা সেজে দোকানে ঢোকা, তারপর বন্দুক দেখিয়ে দোকানের কর্মী ও মালিকদের আটকে রেখে দোকান সাফ করে দেওয়া। তারপর বন্দুক দেখিয়েই বাইকে চেপে চম্পট। কোথাও কোথাও বাধার মুখে গুলি চালিয়েছে ডাকাতরা। রানাঘাট ও রানিগঞ্জের ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইও হয়। এর পাশাপাশি সব ক্ষেত্রেই আরও একটা কমন জিনিস সামনে আসে। ডাকাত দলের বিহার যোগ। এই বিষয়টাও নতুন কিছু নয়। গত কয়েক বছরের ক্রাইম রেকর্ড ঘাঁটলে দেখা যাবে এ রাজ্যের একাধিক অপরাধের ঘটনায় বিহার যোগ আছে। প্রত্যেকটি ডাকাতির ঘটনায় আলাদা আলাদা তদন্ত চলছিল। একাধিক গ্রেফতারিও আছে। কিন্তু চমকে দেওয়ার মত তথ্যটা গোয়েন্দারা পেলেন রানিগঞ্জের ডাকাতির পর। গ্রেফতার হওয়া ডাকাত দলের সদস্যদের জেরা করে গোয়েন্দারা যা জানতে পারলেন তাতে চোখ একেবারে কপালে।
চমকে গেলেন? হ্যাঁ ঠিক শুনছেন। একজন ব্যক্তি এই সব ডাকাতির ঘটানার মাস্টার মাইন্ড। তবে চমকের এখানেই শেষ নয়। আরও অনেক কিছু আছে। আপনি হয়তো ভাবছেন আমাদের রাজ্যে একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় এই ব্যক্তি জড়িয়ে। না। শুধু আমাদের রাজ্য নয়। দেশের সাত সাতটি রাজ্যে একের পর এক সোনার দোকানে ও স্বর্ণ ঋণদানকারী সংস্থার অফিসে ডাকাতির ঘটনায় জড়িয়ে আছে সেই ব্যাক্তি ও তার গ্যাং। কোথায় সেই ব্যক্তি? জানতে চান? তাহলে যেতে হবে বিহারের বেউর জেলে। পাটনার বেউর জেল থেকেই চলছে গোটা অপারেশন। চক্রের মাস্টার মাইন্ড কুখ্যাত সুবোধ সিং ওরফে দিলীপ সিং যে বেউর জেলেই বন্দি।
বোঝাই যাচ্ছে তার নেটওয়ার্ক কতটা বড়। ২০১৮ সাল থেকে জেলে বন্দি সুবোধ। বিহার এসটিএফের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ের সময় গ্রেফতার হয় সুবোধ। গ্রেফতারের সময় তাঁর সঙ্গে ছিল ১৫ কেজি সোনা। অনেকেই ভেবেছিলেন জেলে গিয়ে সুবোধ ডাকাত হয়তো সুবোধ বালক হয়ে উঠবে। কিন্তু, সেটা যে হয়নি তার প্রমাণ পাচ্ছে গোটা দেশ।