জমি অধিগ্রহণকে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না ক্ষতিপূরণ নেওয়ার পরে , সিঙ্গুর মামলায় রাজ্যের বিরাট স্বস্তি সুপ্রিম কোর্টের রায়ে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : ২০১৬ সালের কেদারনাথ যাদব বনাম পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মামলারনজিরের ভিত্তিতে জমি বেসরকারি কোম্পানিকে ফিরিয়ে দেওয়ার কলকাতা হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত খারিজ হয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে। দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, সিঙ্গুরে টাটা ন্যানো প্ল্যান্ট অধিগ্রহণ বাতিল করে দেওয়া ২০১৬ সালের রায় কৃষকদের জন্য একটি প্রতিকার প্রদান করে এবং এক দশক ধরে অধিগ্রহণ নেওয়া বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষেত্রে এটি সাধারণ অধিকার নয়। সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ রাজ্য সরকারের আবেদন মঞ্জুর করার সময় রায় দেয়, “একবার যখন রায়দানের প্রক্রিয়া শেষ হবে এবং কোনও চ্যালেঞ্জ ছাড়াই জমি অধিগ্রহণ করা হবে, তখন আদালত আগ্রহী ব্যক্তির কোনও বিলম্বিত অভিযোগ আর গ্রহণ করবে না।”

সিঙ্গুর জমি অধিগ্রহণ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অবশেষে স্বস্তি পেলো রাজ্য সরকার৷ সরকারের জমি অধিগ্রহণকে চ্যালেঞ্জ করে করা ওই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ খারিজ হয়ে গেল দেশের শীর্ষ আদালতে ৷ সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ একথা স্পষ্ট করে জানায়, ক্ষতিপূরণ নেওয়ার পর জমি অধিগ্রহণকে আর চ্যালেঞ্জ করা যাবে না ৷
এদিকে দেশের শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০১৬ সালের সিঙ্গুর মামলার রায় সেই সমস্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, যারা জমির পরিবর্তে ক্ষতিপূরণ নিয়েছে এবং এক দশক ধরে চলা এই মামলায় কোনওরকম ভাবেই আর অংশগ্রহণ করেনি। তাৎপর্যপূর্ণ, সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের আগের নির্দেশটি খারিজ করে দিল।
উল্লেখ্য বাম জামানায় টাটার ন্যানো কারখানার জন্য সিঙ্গুরে যে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, তাতে মেসার্স শান্তি সেরামিক্স প্রাইভেট লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানের ২৮ বিঘা জমি এবং এই জমির উপর তৈরি কারখানাও ছিল। এর জন্য সেই সময় এই প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ১৪ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে হাতিয়ার করে মেসার্স শান্তি সেরামিক্স প্রাইভেট লিমিটেড নিজেদের জমি ফেরত চায়। রাজ্য তাদের আবেদনে সাড়া না দিলে এই প্রতিষ্ঠানটি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুকরণ করে কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যকে মেসার্স শান্তি সেরামিক্সের জমি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিলে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ হাইকোর্টের ওই নির্দেশ খারিজ করে দেয়।