বিষাক্ত গ‍্যাসে ২ শ্রমিকের মৃত্যু হল বেলঘরিয়ায় রাসায়নিক কারখানায়, চরম আশঙ্কাজনক আরও ১ জন

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : রাসায়নিক কারখানায় বিপত্তি! বিষাক্ত গ‍্যাসে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হল দুই শ্রমিকের। আশঙ্কাজনক আরও এক। শুক্রবার রাতে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর 24 পরগনার বেলঘরিয়ায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃতদের নাম রবিন আইচ (৬০ ) ও সুরজিৎ মাইতি (৫৫ )। প্রাথমিক তদন্তে এটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে মনে করা হলেও এর পিছনে অন‍্য কোনও কারণ রয়েছে কি না,তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনার পরেই তদন্তের স্বার্থে কারখানা চত্বর ঘিরে ফেলেছে পুলিশ এবং দমকল বাহিনী।

তবে এ নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া না মিললেও মুখ খুলেছেন ব‍্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (সাউথ) অনুপম সিং। তিনি বলেন,”ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ড্রামে থাকা রাসায়নিক কেমিক্যাল বের করতে গিয়েই এই বিপত্তি ঘটেছে। বিষাক্ত গ্যাস শ্বাসনালীতে ঢুকে যাওয়ার ফলে দমবন্ধ হয়ে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আরও একজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলঘরিয়ার সাউথ স্টেশন রোডে মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি রাসায়নিক কারখানা রয়েছে। কারখানাটি বেশ পুরনো। মূলত নিকেল তৈরির কাজ হয়ে থাকে এখানে। তার জন্য রাসায়নিক কেমিক্যাল মজুত ছিল বড় বড় ড্রামে। প্রতিদিনের মতো এদিনও ড্রাম থেকে ওই কেমিক্যাল বের করতে গিয়েছিলেন তিন শ্রমিক। তখনই ঘটে এই বিপত্তি! কেমিক্যালের ঝাঁঝালো গন্ধে অচৈতন্য হয়ে পড়েন তাঁরা। মুখ থেকে গ‍্যাজলা বের হতে থাকে। দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই দুই শ্রমিককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। গোবিন্দ নন্দী নামে অপর এক শ্রমিকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে।

ঘটনার জেরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন কারখানা সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। যদিও,পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাসিন্দাদের একাংশের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের আতঙ্ক কাটানোর চেষ্টা করেন। নিরাপত্তার স্বার্থে কারখানা চত্বরে মোতায়েন করা হয় পুলিশ-সহ দমকলের একটি ইঞ্জিন। এদিকে, পর্যাপ্ত সুরক্ষা ছাড়াই কী ভাবে কেমিক্যাল বের করার দায়িত্বভার তুলে দেওয়া হল শ্রমিকদের উপর, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এক্ষেত্রে কারখানা কর্তৃপক্ষের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। যদিও, এই বিষয়ে কোনও সদুত্তর মেলেনি কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।

স্থানীয়দের একাংশের অবশ্য দাবি, “এই ধরনের ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি ওই রাসায়নিক কারখানায়। দমকল ও পুলিশ এসেছিল। বাকিটা তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়।” অন‍্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, “দুর্ঘটনা না অন্য কিছু, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। তবে,ওই কারখানার কাগজপত্র, লাইসেন্স কিংবা অনুমতি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখবে পুর কর্তৃপক্ষ।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *