শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও হেরে গেল তার কাছে, জলপাইগুড়ির বিজয় প্রসাদের তৈরি করা কার্ড এখন বিশ্বের দশটি দেশে
জলপাইগুড়ি : জন্ম থেকেই তার দুটি হাত অচল। কোনও রকমে একটি আঙুল নড়াচড়া করে। মনের জোরেই সেই শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে দিয়েছেন জলপাইগুড়ি হোমের বিজয় প্রসাদ। বিশ্বের দশটি দেশে তাঁর হাতে আঁকা পয়লা জানুয়ারির শুভেচ্ছা কার্ড পৌঁছে গিয়েছে। ২০২৪ সালের শেষ আর নতুন বছরের শুরু এই সন্ধিক্ষণে রেকর্ড কার্ড তৈরি করেছেন তিনি। ইরান, ইরাক, ফ্রান্স, আমেরিকা, সুইৎজারল্যান্ড, লন্ডন, দুবাই সহ বিশ্বের ১০ দেশ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার গ্রিটিংস কার্ডের অর্ডার পেয়েছেন। বরাতমতো কার্ড পেয়েও গিয়েছেন সকলে।
বিজয় বলেন, ‘আমার আঁকা কার্ডের প্রতি বিশ্বের ১০টি দেশের ছবিপ্রেমীরা আগ্রহ দেখিয়েছেন। এ আমার কাছে বড় পুরস্কার। এত মানুষের ভালোবাসা পেয়ে আমি বেশ আপ্লুত।’বছর ৪৬ আগের কথা। মাদার টেরেজার অনুগামীরা হাওড়া স্টেশনে এক ফুটফুটে শিশুকে পড়ে থাকতে দেখেন। ক্রন্দনরত শিশুটির হাতই পক্ষাঘাতদুষ্ট। টেরেজার অনুগামীরা হাওড়া থেকে ওই খুদেকে জলপাইগুড়িতে পাঠিয়ে দেন। ওই শিশুই আজ বিজয়। ৪৬ বছর ধরে জলপাইগুড়ির ওই হোমের সদস্যরা তাঁর পরিচর্যা করে আসছেন। হোম কর্তৃপক্ষের থেকেই বিজয় ছবি আঁকা শেখেন। উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক শোভা, বনজঙ্গল, হাতি, গন্ডার, বাইসনদের অবাধ গতিবিধির দৃশ্য আঁকতে দক্ষ হয়ে ওঠেন। প্রতি বছরই নতুন বছরের শুভেচ্ছা কার্ড তৈরির অর্ডার পান। এবারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব ডঃ সুব্রত গুপ্তও বিজয়কে এক হাজার শুভেচ্ছা কার্ড তৈরির বরাত দেন। বিজয় সময়মতো তা পৌঁছে দিতে দেরি করেননি। বিজয়ের আরও বক্তব্য, ‘আইএএস অফিসার সুব্রত গুপ্ত যখন জলপাইগুড়ির জেলা শাসক ছিলেন সেই সময় থেকেই তিনি আমাকে প্রচুর সহায়তা করছেন। তাঁর কাছে অমি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।