সে ধরে ফেলে ভয়ঙ্কর সব অপরাধীদের! লালু-ভুলু বলে ডাকা পথকুকুরটাই এখন রেলপুলিশের সবথেকে বিরাট ‘ভরসা’
বেস্ট কলকাতা নিউজ : আপনার পাড়ার কালু বা ভুলুর দিকে তাকিয়ে দেখেছেন? সে ছুটে বেড়ায়, খেলে বেড়ায়, চিল্লে বেড়ায়। সেই কালু বা ভুলুই আবার রাতে আপনার পাড়ারই অতীন্দ্র প্রহরী। এবার যদি বলি, ওদেরই একজন পেয়েছে পুলিশের চাকরি? সে কাজ করবে রেলপুলিশের সঙ্গে। নাম টাইগার। থাকে চেন্নাই সেন্ট্রাল রেলস্টেশনে। করোনাকালে তাকে ওখানে ফেলে দিয়েছিল কেউ। তাই বড় হয়ে ওঠাও সেখানে। বছর বছর ধরে স্টেশনেই থাকার কারণে যাত্রীদের সখ্যতা তৈরি হয়ে গিয়েছে টাইগারের। কে যাত্রী আর কে অপরাধী, খুব ভাল করেই চেনে সে। আর স্টেশন চত্বর, সে তো তার প্রতি থাবার নখদর্পণে। এই চেন্নাই সেন্ট্রাল রেলস্টেশনে বর্তমানে কর্মরত রেলপুলিশের সংখ্যা মোট ১২০ জন। প্রতিদিনই তারা যখন টহলদারি দিতেন, সেই সময় তাদের পিছু পিছুই ঘুরত টাইগার। সেই থেকে নজরদারি ও টহলদারি দু’টোই যেন আয়ত্ত করে ফেলে সে। বলে রাখা ভাল, এই পথকুকুরের বিশেষ নামটাও স্টেশনের রেলপুলিশদেরই দেওয়া।

আরপিএফ ইনস্পেক্টর মধুসূদন রেড্ডি জানিয়েছেন, ‘রাতে যখন রেলপুলিশ টহল দিতে বের হত, সেই সময় তাদের সঙ্গী হত টাইগার। কখনও কামাই করত না সে। প্রতিদিন যোগ দিত টহলদারির কাজে। এই ভাবেই পুলিশি আদবকায়দা শিখে গিয়েছিল পথে থাকা সারমেয়টি। তারপরই যুক্ত হল অপরাধ দমনের কাজে। কোনও কিছু সন্দেহজনক লাগতেই সেই দিকে ধেয়ে যেত টাইগার। তারপরই তৎপর হত পুলিশ।’
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘কেউ যদি রেলপুলিশের দিকে অপরাধমূলক উদ্দেশ্য নিয়ে ধেয়ে আসত, তখন সেই ব্যক্তির দিকে হামলে পড়ত টাইগার। এই ভাবেই বহু ছোট-খাটো অপরাধীকে ধরেছে সে। সম্প্রতি, এক ছিনতাইকারী মোবাইল চুরি করে পালাচ্ছিল, তাকেও পাকড়াও করে টাইগার।’ তারপরই এই পথকুকুরের জীবনে আসে নতুন অধ্যায়। তার দিকে নজর পরে রেলপুলিশের আধিকারিকদের। কখনও পুলিশি প্রশিক্ষণ না নিয়েও সে এতটা স্বতঃস্ফূর্ত যা দেখে তাকে নিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় চেন্নাই রেলপুলিশ। সাধারণ ভাবেই পুলিশের সারমেয় মানেই বিদেশি জাতের কুকুর। আপাতত সেই ধারণা ভাঙল টাইগার। ‘অলিখিত’ ভাবেই হয়ে উঠল চেন্নাই সেন্ট্রাল রেলস্টেশনের পুলিশ কুকুর।