অবশেষে কাল হল অনলাইনে খাবার অর্ডার দেওয়াই, আড়াই কোটি হাতিয়ে ধৃত মহিলা ব্যাঙ্ক ম্যানেজার
বেস্ট কলকাতা নিউজ : মহিলা ব্যাঙ্ক ম্যানেজার নিজেই গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন আকর্ষণীয় স্কিমের টোপ দিয়ে। পুলিশ তাঁর খোঁজ শুরু করার পরই উধাও হয়ে যান। কখনও তিনি গা ঢাকা দেন বিহার, কখনও বা উত্তরপ্রদেশে। হাওড়ার বালির ফ্ল্যাটে সম্প্রতি ডেরা বাঁধেন। প্রথমে কেউ তাঁর সন্ধান পায়নি। কিন্তু ওই মহিলা ধরা পড়ে গেলেন অনলাইনে খাবার অর্ডার দিয়েই । মধ্য কলকাতার বড়বাজার থানার পুলিশ আধিকারিকরা বালির ফ্ল্যাটটি শনাক্ত করেন ফুড ডেলিভারি বয়ের ছদ্মবেশে গিয়েই । বুধবার সকালে ওই ফ্ল্যাট থেকেই গ্রেপ্তার হন মধ্য কলকাতার বড়বাজারের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককের প্রাক্তন মহিলা ম্যানেজার গুঞ্জন সিং।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, বড়বাজারের এক কাপড়ের ব্যবসায়ীর একাউন্ট রয়েছে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে। জানা গিয়েছে, প্রায় বছর দু’য়েক আগে গুঞ্জন সিং নামে ওই মহিলা ব্যাঙ্ককে বসেই ফাঁদ পাতেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার থাকাকালীন। তিনি ওই কাপড়ের ব্যবসায়ীকে বলেন, নতুন স্কিম চালু হয়েছে ব্যাংকে। এই স্কিমে লগ্নি করলে প্রচুর টাকা ফেরত পাওয়া যাবে অল্পদিনের মধ্যে। তাঁকে দেখানো হয় বেশ কিছু ভুয়া নথিও। ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের কথা বিশ্বাস করে ফেলেন ব্যবসায়ী। তিনি নগদ ও চেকে ব্যাঙ্ককে ‘লগ্নি’ করেন মোট আড়াই কোটি টাকা । প্রাক্তন ম্যানেজার গুঞ্জন সিং তাঁকে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ওই টাকা দিতে বলেন। তার বদলে আড়াই কোটি টাকার শংসাপত্র দেওয়া হয় ব্যাঙ্ককের নামেই ।
গত বছর ওই ব্যবসায়ী ওই শংসাপত্র দেখিয়ে টাকা তুলতে যান। তখন নতুন ম্যানেজার পদে এসেছেন। তিনি শংসাপত্র দেখেই ব্যবসায়ীকে জানান, এই ধরনের কোনও স্কিমই ব্যাংকে ছিল না। ওই শংসাপত্রও জাল। দেখা যায়, দীপক কেওট নামে এক ব্যক্তির নামে তৈরি হওয়া একটি অ্যাকাউন্টেই জমা পড়ে ওই আড়াই কোটি টাকা। বিভাগীয় তদন্তে ব্যাংক জানতে পারে যে, গুঞ্জন ম্যানেজার হয়ে আসার আগেই দীপক অ্যাকাউন্ট খোলেন। কিন্তু ম্যানেজার পদে বসার পর গুঞ্জন ওই জালিয়াতি শুরু করেন দীপককে কাজে লাগিয়ে। গুঞ্জন সিংয়ের চাকরি যায় তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ওই ব্যবসায়ী বড়বাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত করে দীপক কেওটকে গ্রেপ্তার করলেও গুঞ্জন পালিয়ে যান ।