অবশেষে খুলেছে বই বাজার, কলেজ স্ট্রিট চাতক পাখি ক্রেতার অপেক্ষায়
বেস্ট কলকাতা নিউজ : সরকার রাজ্যজুড়ে কড়া বিধিনিষেধ জারি করেছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে৷ আর তার জেরেই কলেজ স্ট্রিটের বই বাজার বন্ধ ছিল টানা ১৫ দিন৷ এরই মধ্যে এক নতুন নির্দেশিকা জারি হয়৷ প্রশাসনের সিদ্ধান্ত, খুচরো ব্যাবসার দোকান খোলা যাবে৷ দুপুর বারোটা থেকে বিকেল তিনটে পর্যন্ত বিকিকিনি চলবে৷ সেই মতো দোকান খুললেও কলেজ স্ট্রিটের খুচরো বই বিক্রেতারা ক্রেতার কোনো রকম দেখা পাচ্ছেন না৷
মঙ্গলবার থেকেই কলেজ স্ট্রিটের খুচরো বই ব্যবসায়ীরা ঝাঁপ তুলে দোকান খুলে বসেছেন৷ তবে তাতে লোকসানের আশঙ্কাই বেশি লাভের থেকে৷ কেন ? এর উত্তরে বিক্রেতারা বলছেন, সকলের তো আর নিজের গাড়ি নেই ৷ তাছাড়া, স্কুল, কলেজের পড়ুয়া বইয়ের দোকানের গ্রাহকদের একটা বড় অংশই৷ অথচ স্কুল, কলেজ বন্ধ লকডাউন পরিস্থিতিতে ৷এমনকি অনলাইনে চলছে পড়াশোনা৷ ফলে উধাও অল্প বয়সীদের চেনা ভিড়৷ আর অন্যদের পক্ষেও গাড়ি ভাড়া করে আসা সম্ভব নয় শুধুমাত্র বই কেনার জন্য৷ একমাত্র যাঁদের নিজেদের গাড়ি আছে এবং তাঁদের মধ্যেও যাঁদের কাছে বই কেনাটা কার্যত নেশার মতো, তাঁরাই আসছেন শুধু বই পাড়ায়৷ তবে তাতে রুজি বাঁচানো দুষ্কর বই বিক্রেতাদের পক্ষে৷
কলেজ স্ট্রিটের সব বইয়ের দোকান এদিন খোলা ছিল না ৷পসার সাজিয়ে বসেছিলেন মূলত ফুটপাথের ছোট ব্যবসায়ীরাই৷ অধিকাংশ বড় দোকান বন্ধই ছিল৷ বিক্রেতারা আরও জানালেন, গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় তাঁদের অধিকাংশই সাইকেলে অথবা মোটরবাইকে চেপে দোকানে পৌঁছেছেন৷ যাঁদের সেই উপায় নেই, তাঁরা এসেছেন পায়ে হেঁটেই৷ তারপরও বউনিটুকুও হয়নি অনেকেরই৷ কারও বিক্রি হয়েছে মাত্র ১৬৫ টাকার বই৷ টিফিনের টাকাটুকুও তা থেকে নিতে পারেননি৷
এই অবস্থায় বিক্রেতারাই ক্রেতাদের বলছেন, দোকানে আসার আর দরকার নেই৷ বই কিনে নিন অনলাইনেই৷ কারণ, এভাবে চললে আর দোকান খোলা সম্ভব নয় তাঁদের পক্ষে৷ এতে খদ্দের যে কমবে, সেটাও অজানা নয় বিক্রেতাদের কাছে৷ কিন্তু তাঁদের বিকল্প পথ জানা নেই৷ তাই তাঁরা চাইছেন, যত দ্রুত সম্ভব পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক৷ বাস, ট্রেন, মেট্রো খুলে যাক৷ তাহলেই ফিরবে ব্য়স্ততার চেনা সেই ছবি৷ জমবে এমনকি বিক্রিবাট্টাও৷