অবশেষে সরকারি উদ্যোগে ৬ মাসে খুলল বাংলার ১৫ টি বন্ধ চা-বাগান
বেস্ট কলকাতা নিউজ : রাজ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ইতিমধ্যেই 15টি বন্ধ চা-বাগান ফের চালু হয়েছে। রাজ্য সরকারের চালু করা একটি নতুন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোসিডিউর (এসওপি)-র জেরে এই সাফল্য মিলেছে। গত বছরের নভেম্বর মাসে সরকারিভাবে এই এসওপি বিজ্ঞপ্তি আকারে জারি হয়। মূল উদ্দেশ্য ছিল, হঠাৎ করে কোনও বাগান বন্ধ হয়ে গেলে তৎক্ষণাৎ বিকল্প পরিচালনার দায়িত্ব অন্য কারও হাতে তুলে দিয়ে শ্রমিকদের দুর্দশা থেকে রক্ষা করা।
বিগত সময়ে একাধিক বাগানের মালিক আচমকা বাগান ছেড়ে পালিয়ে যান এবং হঠাৎই বন্ধের বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে চা-বাগানের লিজ মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর নতুন লিজ চূড়ান্ত করতে প্রচুর সময় লেগে যেত। এই সময়ে বাগান বন্ধ থাকত এবং শ্রমিকদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হত। এক সময়ে টি-বোর্ডের হাতে এই ধরনের পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা ছিল। কিন্তু, পরবর্তীতে সেই ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়, ফলে শ্রমিকদের দুর্ভোগ বেড়েছিল।

এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় রাজ্য সরকার নতুন এসওপি চালু করে। এই এসওপি অনুযায়ী, কোনও চা-বাগানের লিজের মেয়াদ না-থাকলেও যদি মালিক হঠাৎ বাগান ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং সেই বাগান শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়নের সহমত নিয়ে তিন বছর ধরে মজুরি ও সমস্ত প্রাপ্য পরিশোধ করে চালানো হয়, তবে সেই বাগানকে স্থায়ী লিজ দেওয়া হয়। যেখানে এক বছর ধরে শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়নের সহায়তায় বাগান চালানো হয়েছে, মজুরি ও অন্যান্য বকেয়া পরিষেবা দেওয়া হয়েছে, তবে সে ক্ষেত্রে অস্থায়ী লিজ অনুমোদন করা হয়।
লিজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও এক বছর ধরে ট্রেড ইউনিয়নের সহমত নিয়ে চালু রয়েছে এমন বাগান, সব প্রাপ্য পরিশোধ হয়েছে, সেখানে আবেদন করলেই অস্থায়ী লিজ দেওয়া হয়। এই তিনটি শর্তের ভিত্তিতেই গত পাঁচ-ছয় মাসে রাজ্যের 15টি বন্ধ চা বাগান ফের চালু হয়েছে বলে জানান শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। তাঁর কথায়, “এই মডেল কার্যকর হওয়ায় আরও 2টি চা-বাগানও শীঘ্রই খুলে যাবে, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শেষ পর্যায়ে।” চালু হওয়া ১৫ টি বাগানের মধ্যে 8টি আলিপুরদুয়ার এবং ৭ টি দার্জিলিং জেলায়। সব মিলিয়ে ১৪ হাজার ৪৮৪ জন চা-শ্রমিক উপকৃত হয়েছেন। শ্রম দফতরের সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং অর্গানিক টি এস্টেটস প্রাইভেট লিমিটেড পরিচালিত ৮ টি চা-বাগান সংক্রান্ত মামলা বর্তমানে জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইব্যুনালে (এনসিএলটি) বিচারাধীন। ওই বাগানগুলির মালিকরাও হঠাৎ বাগান ছেড়ে পালিয়ে যান।