ঊনবিংশ শতকের প্রাচীন এক কামানের খোঁজ মিলল খাস কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিট এলাকায়
বেস্ট কলকাতা নিউজ : কখনও ফেয়ারলি প্লেস আর স্ট্র্যান্ড রোডের মোড়ের ফুটপাতে, কখনও দমদমের সেন্ট্রাল জেল মোড় এলাকায় নবাবি আমলের কামান উদ্ধার হয়েছে। আর এবার ক্যামাক স্ট্রিটে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রাচীন কামানের খোঁজ পাওয়া গেল। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাস্তার ধারে বহুবছর ধরে কামানের সামনের অংশটা মাথা উঁচু করে ছিল।
কিন্তু পথচারীরা বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামান নি। সেটি যে কামান তাও বুঝতে পারেন নি। রাজ্যের অ্যাডমিনিস্ট্রের জেনারেল অ্যান্ড অফিসিয়াল ট্রাস্টি (এজিওটি) বিপ্লব রায়ের চোখে প্রথম পড়ে সেটি। বিপ্লববাবু বলছেন, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় চোখটা সেদিকে পড়ে। রাস্তা থেকে মাথা তুলে আড়ালেই ছিল সেটি। সেটি বের করা হয় মাটি খুঁড়ে। ডাক পড়ে প্রত্নতত্ত্ববিদদের। মাটি খুঁড়তেই চোখ কপালে ওঠে সকলের। এতদিন যেটিকে হেলাফেলা করা হচ্ছিল, সেটি আসলে বিশালাকার একটি কামান। তার মুখে আবার আটকানো রয়েছে গোলা।বিপ্লববাবু জানিয়েছেন, মাটিতে আধখানা পোঁতা অবস্থায় আকাশের দিকে মুখ তুলে ছিল কামানটি। এমনিতে কামানের পিঠে নির্মাণের সাল এবং তারিখ খোদাই করা থাকে।
এছাড়াও বহু সাংকেতিক চিহ্ন থাকে, যা দেখে কামানের ইতিহাস জানা যায়। তবে দীর্ঘদিন রাস্তার ধারে অবহেলায় পড়ে থাকায় সেটির গায়ে ধুলোবালি, মাটি জমে ছিল। প্রাথমিকভাবে অনুমান, কামানটি ঊনবিংশ শতকের। কোনও রাজ পরিবারে সেটি ব্যবহৃত হত। এই কামানটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ৬ ফুট। ৭ নম্বর ক্যামাক স্ট্রিটের একটি বাড়ির বাইরে থেকে কামানটি উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, কামানটি স্যার রাজেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়েরও হতে পারে। ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন রাজেন্দ্রনাথ। অ্যাকুইন মার্টিন ও রাজেন্দ্রনাথ মিলে তৈরি করেছিলেন মার্টিন অ্যান্ড কোম্পানি। ব্রিটিশ স্থপতি উইলিয়াম এমারসনের ডিজাইনে মহানগরীর গর্ব ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল তৈরি হয়েছিল তাঁরই তত্ত্বাবধানে। রাজভবনের বিপরীতে এসপ্লানেড ম্যানসন, মহীশূর প্যালেস ইত্যাদি নির্মিত হয়েছিল রাজেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানেই। তাই কামানটির সঠিক ইতিহাস জানার চেষ্টা চলছে ।