এখনো প্রাচীন এক ঐতিহ্য বহন করে চলেছে জলপাইগুড়ির বিখ্যাত গর্তেরশ্বরি মন্দির
জলপাইগুড়ি : বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া গ্রাম নাওতারি দেবোত্তর। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের এই গ্রামেই রয়েছে গর্তেশ্বরীর মন্দির। গর্তেশ্বরীর মন্দিরের পাশাপাশি এখানে গড়ে উঠেছে কালী মন্দিরও সেই মন্দিরেই এবার ধুমধাম করে পুজো হবে। দুর্গা যেমন মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন, তেমনই অরুণেশ্বর নামের এক দৈত্যকে বধ করেছিলেন দেবী ভ্রামরী। ভ্রমরের সাহায্যে দৈত্য বধ করার জন্য আজও তিনি ভ্রামরীদেবী বা দেবী গর্তেশ্বরী নামে পূজিত হন। প্রতি বছর কালীপুজোর সময় এই দেবীর পুজো করা হয় এ গ্রামে।
সীমান্ত লাগোয়া এই গ্রাম কিন্তু ২০১৪ সালের আগেও ভারতের মানচিত্রে ছিল না। তার অবস্থান দেখানো ছিল বাংলাদেশের মানচিত্রে। পরে ছিটমহল বিনিময় চুক্তির সঙ্গে এই গ্রামটিও ভারতীয় মানচিত্রে স্থান পায়। দেবী গর্তেশ্বরীর মূর্তি নিয়ে ত্রিস্রোতা মহাপীঠ দেবী ভ্রামরী মন্দির কমিটির সম্পাদক হরিশ্চন্দ্র রায় জানান, কষ্টিপাথরের তৈরি এই দেবীমূর্তি কত প্রাচীন, তা কেউ ঠিক করে বলতে পারবেন না। দেবীর বাম হাতে অভয় মুদ্রা। আর ডান হাতে বরদান করছেন। বিচিত্র অলংকার পরিহিতা এই দেবী। পুষ্পযুক্ত গলার মালায় অজস্র ভ্রমরের অবয়র বয়েছে।
এই অরুণেশ্বর দৈত্য বধের কাহিনীটা কী? ব্রহ্মা সেই দৈত্যকে বর দিয়েছিলেন যে কোনও লিঙ্গের মানব বা মানবী তাকে বধ করতে পারবে না। কোনও অস্ত্র দিয়ে তাকে বধ করা যাবে না। দ্বিভুজ-চতুর্ভুজ বা অন্য কোনও পদের প্রাণীর হাতে তার মৃত্যু হবে না। কিন্তু ভ্রামরীদেবী ভ্রমরের মালা পরে দৈত্যের সামনে নৃত্য শুরু করেন। অসংখ্য ভ্রমরের দংশনে মৃত্যু হয় দৈত্যের। ভ্রমর ক্লীবলিঙ্গ। তাই ব্রহ্মার বরের কোনও অন্যথাও ঘটেনি। আবার স্বর্গ থেকে পাতালে গিয়েও অরুণ দৈত্যকে আরও একবার বধ করতে হয়েছিল।