এবার উত্তরের হেলিপ্যাড থেকে সুযোগ মিলবে পাহাড় দেখার, বিশেষ উদ্যোগ রাজ্য সরকারের তরফে
নিজস্ব সংবাদদাতা : বাগডোগরা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ যখন হচ্ছে, তখন পাহাড়েও নতুন করে একাধিক হেলিপ্যাড তৈরির উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে মিরিকের সুইস কটেজ সংলগ্ন এলাকায় হেলিপ্যাডটি সংস্কার করা হয়েছে। নতুন হেলিপ্যাড তৈরি হচ্ছে দার্জিলিংয়ের দুতেরিয়া এবং কালিম্পংয়ের ডেলোতে। জায়গা চিহ্নিত করার পাশাপাশি ডিটেইলড প্রোজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির কাজও শেষ করেছে পরিবহণ দপ্তর। নতুন বছরের আগেই দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে হেলিপ্যাড তৈরির কাজ শুরু করে দেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী দপ্তরের কর্তারা। ফলে অদূরভবিষ্যতে হেলিকপ্টারে চেপে পাহাড় দেখতে পারবেন মানুষ এবং পর্যটকেরা। উত্তরবঙ্গের পর্যটন দপ্তর রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে আমাদের উপর এক দারুন নতুন সুযোগ করে দিল রাজ্য সরকার, যার ফল হবে আমাদের জন্য দুর্দান্ত। ভবিষ্যতে মানুষ আরো কাকে আসবে এই পর্যটনের সুযোগ এবং সূত্র ধরে।
এদিকে রাজ্য পরিবহণ কর্তৃপক্ষের যুগ্ম সচিব তথা দার্জিলিংয়ের আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক সোনম লেপচা বলেন , ‘পর্যটনের ওপর বিশেষ নজর দিয়েই এই হেলিপ্যাড তৈরির সিদ্ধান্ত। যেহেতু ডিপিআর তৈরি হয়ে গিয়েছে, ফলে কাজ শুরু হতে বেশি সময় লাগবে না। দ্রুততার সঙ্গে কাজ শেষও করা হবে।’ বাগডোগরা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলে পাহাড়ের সঙ্গে সমতলের আকাশপথে যোগাঘোগ ঘটবে বলেও মনে করছেন তিনি। রাজ্য সরকারের হেলিপ্যাড তৈরির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে পর্যটন মহলও।
দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান থাকাকালীন চেষ্টা করেছিলেন সুবাস ঘিসিং। কিন্তু সুখিয়াপোখরি ব্লকের দুতেরিয়াতে হেলিপ্যাড তৈরি করতে পারেননি। তাঁর অসমাপ্ত কাজকে বাস্তবের মুখ দেখাতে চাইছেন গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের চেয়ারম্যান অনীত থাপা। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সোনাদার কিছুটা দূরে থাকা দুতেরিয়া চা বাগান এলাকায় হেলিপ্যাড তৈরির বিষয়টি তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই পরিবহণ দপ্তর ঘিসিংয়ের চিহ্নিত করা জমিতে হেলপ্যাড তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। হেলিকপ্টার ওঠানামার ক্ষেত্রে আবহাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রকল্পটি চূড়ান্ত করার আগে খতিয়ে দেখা হয়েছে দুতেরিয়ার বর্তমান আবহাওয়া এবং গত কয়েক বছরের এই সংক্রান্ত নথি। এছাড়াও মাটির ধারণক্ষমতা এবং কিছু টেকনিকাল বিষয় খতিয়ে দেখার পরই ডিপিআর তৈরি করা হয়েছে বলে দপ্তর সূত্রে খবর। কালিম্পংয়ের ডেলোতে হেলিপ্যাড তৈরির ক্ষেত্রেও এমন প্রত্যেকটি বিষয় খুঁটিয়ে দেখা হয়েছে বলে পরিবহণ দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘পাহাড়ের অনেক জায়গাই ধসপ্রবণ। ফলে এধরনের প্রকল্পের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্ব ভূমির ধারণক্ষমতা।’
মিরিকের হেলিপ্যাড থেকে ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক যাত্রা সফল হয়েছে। দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে হেলিপ্যাড তৈরি হওয়ার পর তিন জায়গা থেকে যদি হেলিকপ্টার সার্ভিস চালু হয়, তবে পর্যটনশিল্প উপকৃত হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। উল্লেখ্য, পর্যটনে নজর রেখে হেলিকপ্টার পরিষেবার ক্ষেত্রে নজর দিয়েছে সিকিম। পর্যটকদের নিয়ে সিকিমের এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে টেক-অফ করছে হেলিকপ্টার। এদিকে পৃথকভাবে হেলিপ্যাড তৈরি করা হবে বলেও খবর বিমানবন্দর সূত্রে। ফলে আরও প্রশস্ত হবে পাহাড়ের সঙ্গে সমতলের আকাশ যোগাযোগের পথও।