এবার দিল্লি পুলিশ হার মানাল ফেলুদা-ব্যোমকেশকেও ! সাংবাদিক খুনের রহস্যভেদ হল স্রেফ একটা ট্যাটুর মাধ্যমেই

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : স্রেফ একটা ট্যাটু ধরিয়ে দিল খুনিদের। বিরাট সাফল্য দিল্লি পুলিশের। টিভি সাংবাদিক সৌম্য বিশ্বনাথন এবং আইটি কর্মী জিগিশা ঘোষ হত্যা মামলায় প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে কোনো ক্লু ছিল না। অপরাধীদের হাতে আঁকা ট্যাটু কিনারা করল রহস্যের।

দিল্লি পুলিশ পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের মাধ্যমে দুটি খুনের ঘটনার নিষ্পত্তি করেছে। ২০০৯ সালে আইটি কর্মী জিগিশা ঘোষ এবং ২০০৮ সালে টিভি সাংবাদিক সৌম্য বিশ্বনাথনের খুনের পর থেকে রহস্যদেভে মরিয়া ছিল দিল্লি পুলিশ। বছরের পর বছর কেটে গেলেও সেভাবে কোন ক্লু না থাকায় মামলাদুটি ঝুলে ছিল। আইটি কর্মী জিগিশা ঘোষের খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া রবি কাপুর, অমিত শুক্লা এবং বলজিৎ মালিক পরে বিশ্বনাথনের খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

জিগিশা ঘোষের খুনের মামলার ক্ষেত্রে দিল্লি সাফল্য আসে যখন একটি সিসিটিভি ফুটেজ থেকে জানা যায় জিগিশা ঘোষের ডেবিট কার্ড কেনাকাটার জন্য ব্যবহার করার সময় অভিযুক্তদের একজনের হাতে একটি ট্যাটু ছিল। গ্যাং লিডার রবি কাপুর জিগিশা ঘোষের ক্রেডিট কার্ড থেকে জামাকাপড়, চশমা এবং অন্যান্য জিনিস কিনেছিলেন বলেই জানতে পারে দিল্লি পুলিশের আধিকারিকরা। সরোজিনী নগর মার্কেটের সিসিটিভি ফুটেজ স্ক্যান করে পুলিশের হাতে আসে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য। তাকে কাজে লাগিয়েই রহস্যের কিনারা ভেদে উঠে পড়ে আসরে নামে দিল্লি পুলিশের বিশেষ দল। পুলিশ যখন জিগিশা খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরেছে, তখন সৌম্য বিশ্বনাথন খুনের মামলায় প্রকাশ্যে এসেছে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা জানায়, তারা সৌম্যকেও খুন করেছে।

দিল্লি পুলিশের গোয়েন্দা শাখা কাপুর ও শুক্লাকে গ্রেফতার করে। কাপুরের হাতে তার নামের ট্যাটু ছিল, কাপুর এক পুলিশ অফিসারের কাছ থেকে একটি ওয়্যারলেস সেট ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। তিন সন্দেহভাজনের স্বীকারোক্তির পর গ্রেফতার করা হয় অজয় ​​কুমার এবং অজয় ​​শেঠি নামে আরও দুজনকে। বিশ্বনাথনের খুনের ঘটনায় জড়িত মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ । পুলিশ জানতে পেরেছিল যে বিশ্বনাথনকে ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০০৯-এর ভোরে বাড়ি ফেরার সময় গুলি করা হয়।

পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, বলজিৎ ও তার ভাইয়ের চেহারায় হুবহ মিল ছিল। দুজনের মধ্যে কে অপরাধী তা শনাক্ত করতে বেশ সমস্যায় পড়তে হয় দিল্লি পুলিশকে। কনস্টেবল ক্যাপ্টেন সিং জানতেন যে বালজিতের হাতে তার নামের ট্যাটু রয়েছে। এর পর তাকে ধরা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে অন্য অভিযুক্তদের কথা জানতে পারে পুলিশ। একই দিন অভিযুক্ত জিগিশাকে খুন করে, দুপুর দেড়টা পর্যন্ত তার ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটা করা হয়।

উভয় হত্যা মামলা কিনারার জন্য একটি পৃথক দল গঠন করা হয়েছিল। এবং ফরেনসিক প্রমাণগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল অপরাধের কিনারা ভেদে। পুলিশ অপরাধে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করেছে, অপরাধের কিনারা করতে ফরেনসিক স্কেচ তৈরি করে দিল্লি পুলিশ। আদালত চার অভিযুক্ত – কাপুর, শুক্লা, মালিক এবং অজয় ​​কুমারকে একটি সংগঠিত অপরাধ সিন্ডিকেট, হত্যা এবং বিশ্বনাথনের হত্যার সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য অপরাধে জড়িত থাকার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে। অজয় শেঠিকে চুরির সম্পত্তি পাওয়ার ভাগ জন্য এবং মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অফ অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যাক্ট এর আইনের অধীনে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *