এবার পুজোয় ডুয়ার্স ভ্রমণে এক নতুন আকর্ষণ, চা বাগানের ব্রিটিশ বাংলোয় রাত্রিযাপনের পাশাপাশি থাকছে দুর্গাপুজোয় দশভুজা থালি

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : এবার পুজোয় ডুয়ার্স ভ্রমণে থাকছে নতুন এক আকর্ষণ চা বাগানের ব্রিটিশ বাংলোয় রাত্রিবাস। এটা সেই বাংলো, ১৮৫৮ সালে যেখানে থেকেছিলেন ভাইসরয় লর্ড ক্যানিং। হ্যাঁ, সেই হেরিটেজ বাংলোতেই এবার পুজোর ছুটি কাটাতে পারেন আপনিও। সাহেবি আদবকায়দার সঙ্গেই থাকছে বাঙালিয়ানার মিশেল, যা মুগ্ধ করবে আপনাকে। গোরুমারা জাতীয় উদ্যানের কাছেই বড়দিঘি চা বাগান। এই চা বাগানটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৪১ সালে। ব্রিটেশ কোম্পানি থেকে বাগানের মালিকানা আসে রায়ডাক সিন্ডিকেট লিমিটেডের হাতে।

জানা যায় ৬১৯ হেক্টর এলাকাজুড়ে থাকা ওই বাগানে নিয়মিত আসাযাওয়া ছিল ইংরেজদের। তাদের থাকার জন্যই চা বাগানের মাঝে তৈরি হয় বিশাল এই বাংলো। আজও রয়েছে সেটি। ব্রিটিশ আমলের ওই বাংলোটি অবশেষে খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের জন্য। চা বাগানের ওই বাংলোতেই রয়েছে সুইমিং পুল, ইন্ডোর-আউটডোর গেম জোন, লাইব্রেরি, বৈঠকখানা, নেচারওয়াক, জিপসি সাফারি আরও কত কী! এই বাংলো যেন ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল। সঙ্গে চোখ ধাঁধানো স্থাপত্য আপনার মন কেড়ে নেবে। বহু সিনেমার শ্যুটিং হয়েছে এখানে। থেকেছেন অভিনেতা, অভিনেত্রীরা। পুজোয় বড়দিঘি চা বাগানের বাংলোয় অতিথিদের জন্য মেনুতে থাকছে দশভুজা থালি। গরমভাতে ঘি, বেগুনি থেকে শুরু করে চাটনি, পায়েস থাকছে সবটাই। দুপুরে ভাত-ঘুম দেওয়ার পর বিকেলে করতে পারবেন চা বাগান কিংবা জঙ্গল সাফারি। চাইলে হেঁটে আসতে পারেন নেওড়া নদীর পাড়ে। সেখান থেকে সূর্যাস্ত দেখতে দারুণ লাগে। সন্ধ্যায় বাংলোর লনে বসে দার্জিলিং চায়ে চুমুক দিতে দিতে শুনতে পাবেন ময়ূরের ডাক। আপনি যদি বই পড়তে ভালোবাসেন, সন্ধ্যাটা কাটতে পারে বাংলোর লাইব্রেরিতে। কিংবা চাইলে বৈঠকখানায় পরিবারের সবাই মিলে আড্ডা দিয়েও কাটাতে পারেন গোটা সন্ধ্যা। থাকছে কন্টিনেন্টাল ডিনার। চাইলে চাইনিজ কিংবা বাঙালি খাবারও পেয়ে যাবেন।

পরদিন ব্রিটিশ ব্রেকফাস্ট কিংবা বাঙালিয়ানায় মোড়া লুচি-আলুরদম, আপনি যেমনটা চাইবেন, ব্যবস্থা হবে তেমনই। খাওয়াদাওয়া সেরে ঘুরে দেখতে পারেন টি ফ্যাক্টরিতে। এখান থেকেই গোরুমারার জঙ্গলে সাফারির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। তবে বড়দিঘি চা বাগানের বাংলোয় রাত্রিবাস করতে গেলে আপনাকে একটু বেশি খরচ করতে হবে। কারণ, এখানে ডবল বেডরুমের ভাড়া শুরু হচ্ছে সাত হাজার টাকা থেকে। সঙ্গে কপ্লিমেন্টারি ব্রেকফাস্ট। চা বাগানের বাংলোর ম্যানেজার সুরজিৎ সাহা বলেন, আমাদের বাংলোটি দেড়শো বছরের পুরনো। এখানে রয়েছে ছ’টি পরিপাটি কক্ষ।

কাঠের আসবাব, ভিন্টেজ সাজসজ্জা। ব্রিটিশ আমলে ব্যবহৃত নানা সামগ্রী। এখানে আজও সযত্নে রাখা লন্ডনের স্ট্যান্ড ফ্যান। শিকাগোর টেলিফোন। এবার পুজোয় যাঁরা অতিথি হিসেবে আসবেন, তাঁদের জন্য থাকছে দশভুজা থালি। বাংলোয় পা রাখা মাত্র ওয়েলকাম ড্রিঙ্কস দিয়ে স্বাগত জানানো হয় পর্যটকদের। খাওয়াদাওয়া তো আছেই, আমাদের নিজস্ব জিপসিতে ঘুরিয়ে দেখানো হয় গোটা চা বাগান। পর্যটকরা চাইলে নেওড়া নদীর পাড়েও যেতে পারেন। এখানে সুইমিংপুল থেকে টেনিস, বাস্কেট বল থেকে নানা ধরনের খেলাধুলোর ব্যবস্থা রয়েছে। লাইব্রেরি থেকে বৈঠকখানা রয়েছে সবই। সন্ধ্যায় থাকে আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *