এ যেন এক আস্ত যমালয়! ৩ দিনেই কমপক্ষে ৩৫ রোগীর মৃত্যু হল খোদ সরকারি হাসপাতালেই
বেস্ট কলকাতা নিউজ : প্রাণ বাঁচাতে হাসপাতালে ছোটেন সবাই। সেই হাসপাতালই ক্রমশ ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে মৃত্যুপুরী। মহারাষ্ট্রের সরকারি হাসপাতালে মৃত্য়ু হল আরও ৪ রোগীর। এই নিয়ে গত ৪৮ ঘণ্টায় ৩৫ জন রোগীর মৃত্যু হল। এর মধ্যে বহু নবজাতক ও শিশুও রয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মহারাষ্ট্রের নন্দেদ জেলার শঙ্কর রাও চভন সরকারি হাসপাতালে বিগত দুই দিন ধরে মৃত্যুমিছিল শুরু হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবরের মধ্যে কমপক্ষে ৩১ জন রোগীর মৃত্যুর খবর মেলে। এরপরই শোরগোল পড়ে যায়। পরপর এত রোগীর মৃত্যু কীভাবে হচ্ছে, তা জানার জন্য তদন্ত শুরু করা হয়। এরইমধ্যে মঙ্গলবার আরও ৪ জন রোগীর মৃত্যু হল। এই নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫-এ পৌঁছেছে। আরো জানা গিয়েছে, ৩০ সেপ্টেম্বর নন্দেদের ওই হাসপাতালে ২৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়। পরেরদিন, ১ অক্টোবর আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে ১৬টি নবজাতকও রয়েছে।
একের পর এক রোগীমৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়াতেই সোমবার শঙ্কর রাও চভন সরকারি হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, ওষুধের অভাবের কারণেই এত রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। হাসপাতালের এক আধিকারিক জানান, এটা তৃতীয় স্তরের সেবা কেন্দ্র। কিন্তু ৭০-৮০ কিলোমিটারের মধ্যে আর কোনও স্বাস্থ্য কেন্দ্র না থাকায়, সমস্ত রোগীরা এই হাসপাতালেই আসেন। অনেক সময়ে রোগী ভর্তির সংখ্যা এতটাই বেড়ে যায় যে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ অর্থও কম পড়ে। ফলে ওষুধের ঘাটতি তৈরি হয়। এবারও সেই ঘটনাই ঘটেছে।
যদিও পরেরদিনই, মঙ্গলবার হাসপাতালের তরফে অবস্থান বদলে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, হাসপাতালে ওষুধের কোনও ঘাটতি নেই। যে সমস্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে, তারা শেষ অবস্থায় এসেছিলেন। চিকিৎসকরা প্রচেষ্টা করলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ১২ কোটি টাকার ওষুধের বরাত দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের তরফে। আরও ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে গোটা চিকিৎসা প্রক্রিয়ার জন্য। ফলে ওষুধের কোনও ঘাটতি নেই। বিগত দুই দিন ধরে হাসপাতালে প্রচুর পরিমাণ রোগী আসছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের সকলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে।
এদিকে, এত সংখ্যক রোগী মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই, মঙ্গলবার শিবসেনার সাংসদ হেমন্ত পাটিল ওই সরকারি হাসপাতালে যান। সেখানে হাসপাতালের ডিনকে দিয়ে নোংরা শৌচাগার পরিস্কার করান।