গভীর রাতে জলদাপাড়া সংলগ্ন এলাকায় হাতির ভয়াবহ হানায় মৃত্যু হল দুধের শিশুসহ একই পরিবারের তিন জনের
নিজস্ব সংবাদদাতা : গভীর রাতে বনাঞ্চল ছেড়ে লোকালয়ে হাতির হানা। তাতে প্রাণ হারালে এক শিশু সহ একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের কুঞ্জনগর বনাঞ্চল লাগোয়া সিংপাড়ার নাম এমনকি গভীর শোকের ছায়াও। জানা গেছে রাত তখন ঘড়ির কাঁটায় ১টা হবে। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের কুঞ্জনগর বনাঞ্চল লাগোয়া সিংপাড়ায় বনাঞ্চল ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসে হাতির পাল। কমপক্ষে ৭টি হাতি ছিল। বনকর্মীরা হাতি তাড়াচ্ছিলেন। সেই সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন হতভাগ্য দাস পরিবারের সদস্যরা। হাতির সামনে পড়ে যান মনোজ দাস। তাঁকে হাতি সজোরে আছড়ে মারে। মনোজের মা মাখনরানি দাস ছেলেকে বাঁচাতে যান। সেই সময় তাঁর কোলে ছিলেন ৩৫ দিনের নাতনি মনীষা দাস। অবশেষে বৃদ্ধাকে পিষে মারে হাতি। তাঁর কোল থেকে ছিটকে পড়ে ৩৫ দিনের নাতনি। দুধের শিশুরও মৃত্যু হয়। হাতির হামলায় একই পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যুতে নেমেছে শোকের ছায়া নেমে আসে সমগ্র এলাকা জুড়েও।

উল্লেখ্য, উত্তরের লোকালয়ে বেড়েছে বুনো হাতির আনাগোনা। মালবাজার, মেটেলি, বানারহাট ও নাগরাকাটা, আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা ও মাদারিহাট এবং শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ি, মাটিগাড়া, খড়িবাড়ি, ফাসিদেওয়া ব্লকের বাগডোগরা, বুড়াগঞ্জ, হাতিঘিসা, মণিরাম, কেটুগাবুরজোত, মতিধর, গিরিশচন্দ্র, মানঝা চা বাগান এলাকায় মূলত হাতির হানা ক্রমাগত বাড়ছে। স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে বিপদ। বাড়ছে মানুষ-হাতি সংঘর্ষ, মৃত্যু। এদিকে বনকর্তাদের মতে, হাতির করিডর ক্রমশ দখল হয়ে যাচ্ছে। ফলে জঙ্গল এলাকা গুলো ক্রমাগত টুকরো টুকরো পকেটে পরিণত হয়েছে। তাই চলাচলের পথে বাধা পেয়ে হাতি ক্রমশই মারমুখী হচ্ছে। বনদপ্তরের তরফে হাতির হানা রুখতে ফেনসিং-সহ নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । তবে তাতে আখেরে কতটা লাভ হচ্ছে, স্বাভাবিকভাবে একের পর এক প্রাণহানির ঘটনায় উঠছে সে প্রশ্নই।