চরম ভোগান্তি রোগীদের, উপেক্ষা আদালতকেও , সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকেও অগ্রাহ্য করার স্পর্ধা দেখালেন জুনিয়র চিকিৎসকরা
বেস্ট কলকাতা নিউজ : সামনেই দুর্গাপুজো। সাধারণত দুর্গাপুজোর সময় অধিকাংশ সিনিয়র ডাক্তাররা ছুটিতে চলে যান। এর মধ্যে, মঙ্গলবার থেকে ফের রাজ্য জুড়ে পূর্ণ কর্মবিরতির ডাক দিল জুনিয়র চিকিৎসকরা। ইতিমধ্যেই জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে, রাজ্য জুড়ে রোগীদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। বিশেষ করে প্রান্তিক এলাকায় ক্রমে ভেঙে পড়ছে স্বাস্থ্য পরিষেবা। এবার আরও একবার তারা কর্মবিরতিতে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের সমস্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অথচ সোমবারই (৩০ সেপ্টেম্বর), সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে উঠে এসেছিল জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির প্রসঙ্গ। আরও একবার জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার বার্তা দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। শুধু জরুরি পরিষেবা নয়, বহির্বিভাগেও পরিষেবা দিতে হবে বলে জানিয়েছিল আদালত।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যর পক্ষ থেকে জানানো হয়, জুনিয়র ডাক্তাররা হাসপাতালগুলিতে শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবা দিচ্ছেন। বহির্বিভাগ ও অন্য ক্ষেত্রে পরিষেবা দিচ্ছেন না। জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং অবশ্য জানান, রাজ্যর এই বক্তব্য ঠিক নয়। জুনিয়র চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় পরিষেবা দিচ্ছেন। প্রধান বিচারপতি জানতে চান, কেন শুধু প্রয়োজনীয় পরিষেবার কথা বলা হচ্ছে? তাহলে কি সব ক্ষেত্রে তাঁরা কর্তব্য পালন করছেন না? ইন্দিরা জয়সিং জানান, প্রয়োজনীয় পরিষেবার মধ্যে বহির্বিভাগ পড়ে না। এরপর প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, “হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও অন্যান্য বিভাগ-সহ সমস্ত ক্ষেত্রে পরিষেবা দিতে হবে জুনিয়র ডাক্তারদের।
সুপ্রিম কোর্টের শুনানির পর, জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন, সোমবার সন্ধ্যায় তাঁরা বৈঠক করে কর্মবিরতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। আট ঘণ্টার জিবি বৈঠকের পর, এদিন জুনিয়র চিকিৎসকরা পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতিতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। অর্থাৎ, বহির্বিভাগ তো বটেই, কোনও বিভাগেই পরিষেবা দেবেন না তাঁরা। প্রয়োজনীয় পরিষেবাও দেবেন না। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানির প্রথমদিনই জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার বার্তা দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। তবে, সেই সময়ও জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেননি। দ্বিতীয় শুনানির দিন, জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি সুপ্রিম কোর্টের সুর বেশ নরমই ছিল। তবে, সোমবারের শুনানিতে স্পষ্ট করেই আদালত বলেছিল, তাদের সমস্ত পরিষেবা দিতে হবে। সেই সুপ্রিম নির্দেশকেও অগ্রাহ্য করার স্পর্ধা দেখালেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
এর জেরে, সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সরকারি হাসপাতালগুলিতে এখন উপচে পড়ছে রোগীর ভিড়। রোগীদের পরিবারের অনেকেই জানিয়েছেন, চিকিৎসা করাতে এসে তাদের দিনের পর দিন হাসপাতালে ঘুরতে হচ্ছে। বলা হচ্ছে, চিকিৎসকদের সংখ্যা সীমিত। অল্প সংখ্যক চিকিৎসককে বিপুল সংখ্যক রোগী দেখতে হচ্ছে। ফলে, ডাক্তার দেখাতে এসে ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের। তারপরও নিজেদের দাবিতে অনড় জুনিয়র চিকিৎসকরা। রাজ্যের পক্ষ থেকে কোনও দৃশ্যমান পদক্ষেপ না করাতেই, তাঁরা ফের পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতিতে ফিরছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।