নেহরু-ইন্দিরা- বাজপেয়ীরা দেশনেতা হতে চেয়েছিলেন, বিশ্বগুরু হতে চাননি, মোদিকে তীব্র কটাক্ষ তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের
বেস্ট কলকাতা নিউজ : পাকিস্তানের অনুরোধ মেনে নিয়ে আপাতত পালটা প্রত্যাঘাত বন্ধ করে দিয়েছে ভারত ৷ শনিবার সন্ধ্যায় ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রি জানিয়েদেন যে দুই দেশই আপাতত কোনোরকম সংঘর্ষে জড়াবে না বলে সহমত হয়েছে ৷ এদিকে এই ঘোষণার পর থেকে কংগ্রেস-সহ একাধিক বিজেপি বিরোধী দলকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করতে দেখা গিয়েছে ৷ ইন্দিরা গান্ধির উদাহরণ টেনেই সেই সমালোচনা করা হয়েছে মোদির বিরুদ্ধে ৷ সেই সমালোচনাই শোনা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় ৷
হুগলির শ্রীরামপুরের সাংসদ বলেন, ‘‘এটা তো ঠিক কথা আমরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের (মার্কিন প্রেসিডেন্ট) টুইট দেখে আমরা বুঝতে পারি যে এই বিষয়ে একটি সমঝোতা হতে চলেছে ৷ এটাও ঠিক কথা যে প্রথম ডোলান্ড ট্রাম্পের টুইট (বর্তমানে এক্স) দেখেই মনে হয়েছে যে আমেরিকা এই বিষয়ে মধ্যস্থতা করতে চাইছে ৷ তার পরই সমঝোতার বিষয়টি সামনে আসে৷ তার পর বিদেশসচিব বলেছেন ৷ কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটা ভূমিকা রয়েছে ৷’’যদিও দেশ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই নিয়ে এর বেশি কিছু মন্তব্য করতে রাজি হননি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ কিন্তু তিনি সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ্য করে কটাক্ষ করেন ৷ তবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর নাম উল্লেখ করেননি ৷
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরোও বলেন, ‘‘আমার একটা জিনিস মনে হয়েছে যে ইন্দিরা গান্ধি, পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু, লালবাহাদুর শাস্ত্রী, এমনকী অটলবিহারী বাজপেয়ীর মতো রাজনীতির বিশাল ব্যক্তিত্বদের অভাব আমরা এখন অনুভব করছি ৷ এঁরা দেশের নায়ক হতে চেয়েছিলেন ৷ এঁরা দেশনেতা হতে চেয়েছিলেন ৷ এঁরা দেশকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন ৷ কেউ বিশ্বগুরু হতে চাননি ৷’’

উল্লেখ্য, সারা বিশ্বের রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রভাব বোঝাতে বিজেপি মোদিকে বিশ্বগুরু বলে উল্লেখও করেছে বারবার ৷ এই নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় বহু পোস্টও করা হয় বিজেপি ও তাদের সমর্থকদের তরফে ৷ ফলে বিশ্বগুরু শব্দের উল্লেখ করে আসলে মোদিকেই যে নিশানা করেছেন কল্যাণ, তা বলাই বাহুল্য ৷ তাছাড়া প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের কাছে তিনি কৃতজ্ঞ বলেও জানিয়েছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ ৷ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, পাকিস্তানকে কি জবাব একটু কম দেওয়া হল ? আরও একটু জবাব দেওয়া কি উচিত ছিল ভারতের ? তবে এই প্রশ্নের উত্তর কল্যাণ দেননি ৷ তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করব না ৷’’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের একটি মন্তব্য এদিন তুলে ধরা হয়, যেখানে সুকান্ত বলেছিলেন যে পাকিস্তান ভয় পেয়ে পিছিয়ে গিয়েছে ৷ এই প্রসঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কটাক্ষ করেন সুকান্তকে ৷ তিনি বলেন, ‘‘আসলে সুকান্ত মজুমদার একজন দায়িত্বজ্ঞানহীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ৷ উনি জানেন না যে কী কথা বলতে হয়, আর কী কথা বলতে হয় না ৷ উনি ব্যাপারটা কিছু বোঝেন না ৷’’ এখানেই না থেমে সুকান্তর উদ্দেশ্যে আরও কটাক্ষ ছুঁড়ে দেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, ‘‘ওঁর আর শুভেন্দুর মধ্যে যেমন লড়াই হয়, এটাকে তেমনই ভেবেছেন বোধহয় ৷ তিনি এই দেশের একজন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্ত্রী ৷ সেই জন্যই এমন কথা বলেন ৷ ওঁকে বলুন এক্স হ্যান্ডেল ডোনাল্ড ট্রাম্প কেন আগে পোস্ট করলেন ?’