পরিচিত কেউই জড়িত বেহালায় মা-ছেলে খুনের ঘটনায় ! বয়ানে অসঙ্গতি এমনকি মৃতার স্বামীরও
বেস্ট কলকাতা নিউজ : পরিচিত কেউই কি জড়িত? বেহালার পর্ণশ্রীতে মা-ছেলের জোড়া খুনের ঘটনায়! প্রাথমিক তদন্তে তদন্তকারীরা আপাতত এমনই অনুমান করছেন। তবে রয়েছে বেশ কিছু প্রশ্নও। জানা গেছে সোমবার রাত আটটা নাগাদ ফ্ল্যাটে ফিরে আঁতকে ওঠেন পেশায় বেসরকারি ব্যাঙ্ক কর্মী তপন মণ্ডল।ফ্ল্যাটের দুটি ঘরে পড়ে ছিল ছেলে তমজিত্(১৩) ও স্ত্রী সুস্মিতার(৪৫) রক্তাক্ত দেহ । খোলা ছিল এমনকি ফ্ল্যাটের দরজাও। তপন মণ্ডল দাবি করেছিলেন অল্প ঠেলতেই সেই দরজা খুলে যায় বলেও। এদিকে, তমোজিত্কে পড়াতে এসে প্রাইভেট টিউটর ফিরে যান দরজা বন্ধ দেখে, ডাকাডাকি করে সাড়া না পাওয়ায়। আর পুলিশের সন্দেহ ঠিক এখানেই। যে দরজা তপন মণ্ডল অল্প ঠেলতেই খুলে ফেললেন সেটা টিউটর কেন পারলেন না!
পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, তপন বাবু ও তার স্ত্রীর কাছে থাকতো নিচের মেন ফটকের চাবি। গতকাল তপন মণ্ডল নিয়ে যাননি কমন চাবি। সেটা পাওয়া গিয়েছে ফ্ল্যাটেই। তিনি পুলিশের সামনে ব্যাখ্যা দিতে ভুলে গিয়েছিলেন। তদন্তকারীরা এও খতিয়ে দেখছেন, কেন তপনবাবু সোমবার কমন চাবি নিলেন না! তদন্তকারীরা আপাতত প্রায় নিশ্চিত একটা ব্যাপারে, এই ঘটনায় জড়িত পরিচিত কেউ। কারণ পরিবারের লোকজন বাইরে থেকেই কথা বলতেন অপরিচিত কেউ এলে। তেমনটাই জানা যাচ্ছে প্রতিবেশীদের বয়ানেও। আততায়ী ব্যবহার করেছে ডুপ্লিকেট চাবিও। এমনটাই অনুমান পুলিশের। কারণ পুলিশ কোনও প্রমাণ পায়নি জোর করে ঘরে ঢোকার। লুঠপাটের চিহ্ন রয়েছে ঘরের চারপাশেও। তবে সেটা পুলিশকে বিভ্রান্ত করতেই কিনা সন্দেহ রয়েছে তা নিয়েও।
১৩ বছরের ছেলে তমোজিত্ ছিল স্কুল ড্রেস পরা অবস্থায়। অর্থাৎ,তাকে খুন করা হয় অনলাইন ক্লাস চলাকালীন বা তার পরেই। তমোজিত্ অনলাইন ক্লাস করত মায়ের ফোন নিয়েই। এমনকি বেপাত্তা সেই ফোনও। আততায়ী কেন সেই ফোন নিয়ে গেল, তাও পুলিশকে বেশ ভাবাচ্ছে। তা হলে কি কোনও তথ্য লুকিয়ে রয়েছে সেই ফোনেই! দেহ দেখে পুলিশের আরও অনুমান মা ও ছেলে খুন হয়ে থাকতে পারেন সোমবার দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে। তদন্তকারীদের মনে প্রশ্ন উঠেছে , গলার নলি কাটা হল অথচ কেউ চিত্কার শুনতে পেলেন না! তাহলে কি খুনের আগে মা ও ছেলেকে কিছু খাইয়ে অজ্ঞান করা হয়েছিল পরিকল্পনা করেই? সব মিলিয়ে এই ঘটনায় এখনও বেশ কিছু মিসিং লিঙ্ক রয়েছে। পুলিশ মরিয়া চেষ্টা করছে সেগুলি খুঁজে পেতেই।