পড়ুয়াদের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব তৈরি মূল লক্ষ্য, প্রাথমিকে চালু হচ্ছে হাউস সিস্টেম

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : গ্রিফিন্ডর, স্লিদারিন, রোয়েনা র‍্যাভেনক্ল কিংবা হাফলপাফকে মনে পড়ে? সকলেই হ্যারি পটার চলচ্চিত্রে এক একটা চরিত্র। হাউস ছাত্রদের মধ্যে দলগত চেতনা, বুদ্ধিমত্তা, সৃষ্টিশীলতা ও প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করেছিল। এবার ঠিক সেই হ্যারি পটার সিনেমার কায়দায় রাজ্যের প্রাথমিক পড়ুয়াদের মধ্যে ‘হাউস সিস্টেম’ চালু করছে শিক্ষাদপ্তর। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই মুর্শিদাবাদ জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে এই ‘হাউস সিস্টেম’ চালু হয়ে যাবে। লক্ষ্য একটাই—শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মানোন্নয়নের পাশাপাশি তাদের নেতৃত্বগুণের বিকাশ, সৃষ্টিশীলতার বিকাশ ও প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব গঠন। আর এটা চালু হয়ে গেলে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের শিক্ষায় নতুন দিগন্ত খুলে যাবে বলেই আশাবাদী শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শুরু করে সকলেই।

‘হাউস সিস্টেম’ আসলে কী? জানা গিয়েছে, হাউস সিস্টেমে স্কুলের সমস্ত শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন দল বা হাউসে ভাগ করা হবে। যেমন, লাল, নীল, সবুজ ও হলুদ। প্রতিটি হাউসের নেতৃত্ব দেবে মনোনীত হাউস ক্যাপ্টেন ও শিক্ষক গাইড। পড়াশোনা, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কিংবা সামাজিক কার্যক্রম—সব ক্ষেত্রেই হাউস ভিত্তিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বছরের শেষে সর্বাধিক সাফল্য অর্জনকারী হাউসকে ‘চ্যাম্পিয়ন হাউস’ ঘোষণা করা হবে। ‘হাউস সিস্টেম’কে হ্যারি পটারের হাউস সিস্টেমের সঙ্গে তুলনা করছেন অনেকেই। হ্যারি পটারের মতো জাদু না থাকলেও এই নতুন উদ্যোগ শিশু পড়ুয়াদের মননে জাদু ছড়িয়ে দিতে পারে। তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্ব ও সহমর্মিতার বীজ বপন করবে। মুর্শিদাবাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি এমন নতুন সিস্টেমে ঢুকে গেলে তার ফল হবে সুদূরপ্রসারী। শিক্ষামূলক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে শিশুদের আগ্রহ বাড়বে। সেই সঙ্গে তাদের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধও গড়ে উঠবে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতি শিশুদের দায়িত্ববোধ বাড়াতে সাহায্য করবে। নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে শিখবে। যা তাদেরকে আগামীদিনে আরও বলিষ্ঠ করে তুলবে। অভিভাবকরাও মনে করছেন, এর ফলে শিশুদের মধ্যে দলগতভাবে কাজ করার অভ্যাস এবং আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে। বহরমপুরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা বলেন, ‘হাউস সিস্টেম আসলে পড়াশোনার পাশাপাশি মানবিক মূল্যবোধ শেখার এক বাস্তব মঞ্চ।’ শিক্ষাদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই জেলার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাউস সিস্টেম সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতিটি বিদ্যালয়ে মাসিক ও বার্ষিক হাউস কার্যক্রমের নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার থাকবে। যেখানে পড়াশোনা ছাড়াও খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক ও সমাজসেবামূলক উদ্যোগ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *