ফের ভয়াবহ আগুন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে, চিকিৎসকদের কিডনির অস্ত্রোপচার মোবাইলের আলো জ্বেলে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : মেডিকেল কলেজের এসএসবি বিল্ডিংয়ের দোতলার সার্ভার ও তিনতলার সেন্ট্রাল সার্ভারে আচমকা আগুন লাগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ ।এমনকি ধোঁয়ায় ঢেকে যায় সমগ্র ভবন। একপ্রকার দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয় সেই মুহূর্তে । তারমধ্যেই ওটিরুমে এক মহিলার অস্ত্রোপচার হল মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে। কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সাক্ষী থাকল এমনই এক বিরল ঘটনার।
দুপুর তখন পৌনে তিনটে হবে । ভয়াবহ আগুন লাগে এসএসবি’র দোতলার সার্ভার রুমে। প্রথমে তা টের পান তিনতলার পিজিটিরাই । পোড়া গন্ধ পান পিজিটিরা। সেই কারণ খুঁজতে গিয়ে তাঁদের নজরে আসে সার্ভার রুমে আগুন লাগার বিষয়টি । আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় তিনটে নাগাদ। সেই সময় অস্ত্রোপচার চলছিল বছর ছেচল্লিশের ছায়া ঘোষের। ইউরোলজির চিকিৎসকরা মহিলার কিডনির ডানদিক থেকে বার করছিলেন ৬-৭ সেন্টিমিটারের টিউমার। আচমকা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ডাক্তাররাও চরম বিপদে পড়ে যান । এ দিকে, ওই অবস্থায় সম্ভব ছিল না অপারেশন বন্ধ রাখা। পেট কাটা হয়ে গিয়েছে। টিউমারের অবস্থান এমন ভাবে ছিল যে সম্ভাবনা ছিল প্রচুর রক্তক্ষরণেরও । এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা টিউমার বার করানোর সিদ্ধান্ত নেন চারটি মোবাইলের আলো জ্বেলে।
এই বিষয়ে মেডিক্যালের এমএসভিপি অঞ্জন অধিকারী বলেন, “চারটি মোবাইল এবং একটি টর্চের সাহায্যে শুরু হয় অস্ত্রোপচার। মোবাইলের আলোতে কাজ না হলে ভাবা হয়েছিল প্রয়োজনে রোগীকে ওটি রুমের বাইরে এনে অস্ত্রোপচারের কথাও। নইলে রোগীর প্রাণ সংশয় হতে পারত।” ইউরোলজির চিকিৎসক সুনির্মল চৌধুরী জানান, “কাজটা মোটেই সহজ ছিল না। মোবাইলের আলোয় কীভাবে অস্ত্রোপচার হবে খানিকক্ষণ ভাবতে হয় তা নিয়েও । ৬-৭ সেন্টিমিটারের টিউমার চেপে ছিল। এক্ষেত্রে রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা প্রবল। তাই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিই মোবাইলের আলোতেই। তবে রোগী এখন ভাল আছেন।”