ব্যানার্জী ফিল্ম প্রোডাকশন প্রযোজিত “পানিফল” এর ট্রেলার ও পোষ্টার উন্মোচন
বেস্ট কলকাতা: ইন্দ্রাণী সেনগুপ্ত, কলকাতা – আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কোনো পরিবারে যদি সন্তান না হয়, তবে সব সময় তার কারণস্বরূপ স্ত্রী এর দিকেই আঙ্গুল তোলা হয় এবং তাকে বাঁজা বলে অভিহিত করা হয়। গতকাল কলকাতা প্রেস ক্লাবে ব্যানার্জী ফিল্ম প্রোডাকশন এর প্রযোজনায় এমনি একটি সমাজের অন্ধকার দিকের এক মর্মান্তিক সত্যকে সকলের সামনে মেলে ধরার উদ্দেশ্যে তাদের প্রথম ছায়াছবি “পানিফল” এর ট্রেলার এবং পোস্টার উন্মোচন করা হয়। এদিন এই উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রযোজক অয়ন ব্যানার্জী সহ উপস্থিত ছিলেন পরিচালক পরিচয় চট্টোপাধ্যায়, সংগীত পরিচালক সঞ্জীব দাস, প্রোডাকশন ডিসাইনার রাগিব আফীফ, ডি ও পি দেবাশীষ মজুমদার সহ অন্যান্য কলাকুশলীরা। প্রধানত একটি ভিন্ন স্বাদ এর গল্প হলো এই “পানিফল”। এই ছবিতেও সেই দিকটি তুলে ধরেছেন পরিচালক, আমাদের সমাজের সেই বহু পুরাতন বন্ধ্যাত্ব সমস্যা এবং বর্তমানে তার সম্ভাব্য প্রতিকারই মূল বিষয়বস্তু এই ছবির। পেশায় রিক্সা চালক শ্যামল (বিদেশ) এর নিম্নবিত্ত সংসার, স্ত্রী শালুক (পূজা) অপর্ণা নামক এক মহিলা (ইমন) -র বাড়ি তে ঝি এর কাজ করে। নিত্যদিন শ্যামল মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে শালুককে মারধোর করে এবং এই মারধোরের এর কারণ হলো শালুক এর এখন কোনো সন্তান হয়নি। যদিও শান্তস্বভাব এর শালুক ভেবেছিলো কষ্টের সংসার হলেও তারা সুখে থাকবে, স্বামী তাকে খুব ভালোবাসবে, সংসারে একদিন তাদের সন্তান আসবে এবং সংসার পরিপূর্ণ হবে। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত শালুকের সেই স্বপ্ন প্রতিদিন চূর্ণ বিচূর্ণ হয়, যখন রাতে শ্যামল তাকে পাশবিক অত্যাচার করে ও বাঁজা বলে গালিগালাজ করে। অপর্ণার বাড়িতেই শালুক ঝি এর কাজ করলেও অপর্ণার সাথে তার বন্ধুসুলভ মধুর সম্পর্ক। এতটাই গভীর যে শালুক তার সংসার এর সব কথা অপর্ণা কে বলতো, প্রতিদিন স্বামীর হাতে নির্যাতিত হওয়া এবং তার প্রতি কটূক্তির গল্প সবই বলতো সে। শালুক এর জীবনের এই চাওয়া পাওয়ার অপুর্ণতা অপর্ণা কে অন্তর থেকে নাড়া দেয়। অপর্ণার মুখে শালুক রূপম এর কথা শোনে। যত গল্প শোনে ততই সে রূপম এর প্রতি আকৃষ্ট হয়। কোথাও যেন রূপম কে সে তার কল্পনার কাছের মানুষ হিসেবে ভাবতে শুরু করে। কাল্পনিক সম্পর্কের চড়াই উতরাই তে শালুক অজানা আনন্দে ভেসে যায়। রূপম এর ভালোবাসা তার জীবনের অপূর্ণ স্থান গুলো পূর্ণ করতে থাকে এবং শেষ অব্দি একদিন সেই সম্পর্কের মিলন হয় অপর্ণার বাড়িতে তুই দেহ ও প্রাণ এক হয়ে যায়। আর এখান থেকেই গল্পে টুইস্ট শুরু হয়। কিন্তু এরপর কি ? কে এই রূপম? কিভাবেই বা সেই কল্পনার মানুষটি স্বশরীরে উপস্থিত হয় তার কাছে? আদৌ কি শালুক মা হতে পারবে ? যদি মা হয় তাহলে শ্যামল কি মেনে নেবে সেই ? কারণ রূপম এর সাথে সহবাস এ যদি শালুক গর্ভবতী হয় তাহলে তো বন্ধ্যাত্ব টা শ্যামল এর মধ্যেই ছিল, কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজ এ বিশেষ করে শিক্ষার হার যেখানে এত কম সেখানে কি কোনো পুরুষ এটা মেনে নেবে যে বন্ধ্যাত্ব টা শুধু মহিলা নয় একজন পুরুষ এর ক্ষেত্রেও হতে পারে ? এ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আপনাদের অবশ্যই দেখতে হবে “পানিফল”। পরিচালক পরিচয় চট্টোপাধ্যায় তার নিজের রচিত কাহিনীটিকে অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন এক সাবলীল ভঙ্গীতে। দুটো গান ব্যবহৃত হয়েছে এই সিনেমায় যার মধ্যে একটি গোষ্ঠ গোপাল দাস এর এবং অন্যটি পরিচালক এর নিজের লেখা, যা সঙ্গীতের মাধ্যমে অনন্য সুরে স্মৃতি মধুর করে তুলেছেন সংগীত পরিচালক সঞ্জীব দাস। ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয়ে করেছেন, বিদেশ হাজরা(শ্যামল), পূজা (শালুক), শুভময়(রূপম), ইমন(অপর্ণা) প্রমুখ। ছবির প্রযোজক হলেন ব্যানার্জী ফিল্ম প্রোডাকশন এর কর্ণধার অয়ন ব্যানার্জী।