মার্কিন শুল্ক-চাপ উড়িয়ে ইতিমধ্যেই রাশিয়া থেকে ২৫৬০০কোটি টাকার তেল ক্রয় করলো ভারত

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : একটি ইউরোপীয় থিঙ্ক ট্যাঙ্ক জানিয়েছে, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল গ্রাহক ভারত সেপ্টেম্বরে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনতে 2.৫ বিলিয়ন ইউরো (ভারতীয় মূল্যে যা প্রায় ২৫৬০০ কোটি টাকার সমান) ব্যয় করেছে, যা তার আগের মাসের তুলনায় ১৪ শতাংশ কম।সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (CREA)-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে চিনের পরে ভারত রুশ জীবাশ্ম জ্বালানির দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা ছিল। প্রথাগতভাবে মধ্যপ্রাচ্যের তেলের উপর নির্ভরশীল ভারত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ শুরুর সময় থেকে রুশ তেলের আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং ইউরোপীয় চাহিদা হ্রাসের ফলে রাশিয়ার তেল ব্যাপক ছাড়ে পায় ভারত। ফলে, ভারতের রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানি অল্প সময়ের মধ্যেই তার মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির ১ শতাংশেরও কম থেকে প্রায় ৪০ শতাংশে পৌঁছে যায়।

সেপ্টেম্বরে সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার জানিয়েছে, ভারত রাশিয়ার জীবাশ্ম জ্বালানির দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা হয়ে উঠেছে এবং মোট 3.6 বিলিয়ন ইউরোর তেল আমদানি করেছে। ভারতের ক্রয়ের মধ্যে ৭৭ শতাংশ (২ .৫ বিলিয়ন ইউরো), এরপর কয়লা ১৩ শতাংশ (৪৫২ মিলিয়ন ইউরো) এবং তৈল্য পণ্য ১০ শতাংশ (৩৪৪ মিলিয়ন ইউরো) ক্রয়ের আধিপত্য বিস্তার করেছে ৷ ভারতের রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানি প্রতিদিন প্রায় ১ .৬ মিলিয়ন ব্যারেল, যা মাসিক ভিত্তিতে 9 শতাংশ কমে ফেব্রুয়ারির পর থেকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে ৷ যদিও ভারতের মোট আমদানি সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। CREA জানিয়েছে, রাশিয়া থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল শোধনাগারগুলির আমদানি মাসিক ৩৮ শতাংশ হ্রাসের কারণেই মূলত রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের ভারতীয় আমদানি হ্রাস পেয়েছে। ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত তেল শোধনাগারগুলির রুশ তেল আমদানি ২০২২ সালের মে মাসের পর থেকে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে।

উল্লেখ্য ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া যখন ইউক্রেন আক্রমণ করে, তখন রুশ অর্থনীতিকে পঙ্গু করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলি ধারাবাহিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। প্রধান নিষেধাজ্ঞাগুলির মধ্যে একটি ছিল রাশিয়ার তেল রফতানির উপর, যা ইউরোপীয় বাজারে রাশিয়ার তেল বিক্রির ক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে। ফলে, রাশিয়া তার তেলের জন্য নতুন ক্রেতা তৈরির চেষ্টায় তুলনামূলক অনেক কম দামে অপরিশোধিত তেল সরবরাহ শুরু করে। ভারতের বিশাল জ্বালানি চাহিদা এবং তেলের দামের ওঠানামার প্রতি সংবেদনশীল অর্থনীতির কারণে, এই প্রস্তাব উপেক্ষা করা তাদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় বলে মনে হয়। রাশিয়ার তেলের দামে ছাড়, যা কখনও কখনও অন্যান্য তেলের বাজার মূল্যের তুলনায় প্রতি ব্যারেল ১৮ -২০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত কম ছিল, যা ভারতকে অনেক সস্তায় তেল কিনতে সাহায্য করেছিল। সেপ্টেম্বরে, রাশিয়ার ইউরালস অপরিশোধিত তেলের উপর ছাড় মাসিক ভিত্তিতে ৩৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ব্রেন্টের বিপরীতে গড়ে প্রতি ব্যারেল ৫ .১৩ মার্কিন ডলার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *